জাগ্রত হও

"অতএব ..........যদি জাগ্রৎ না হও, তবে আমি চোরের ন্যায় আসিব; এবং কোন্‌ দণ্ডে তোমার নিকটে আসিব, তাহা তুমি জানিতে পারিবে না"।(প্রকাশিত বাক্য। 3:3 )।
প্রভুর দ্বিতীয় আগমনে অনেক নিদ্রিত বিশ্বাসী পড়ে থাকবে। কারণ তারা জানতেই পারবেনা। গেথশিমানী বাগানে প্রভু যীশু তাঁর শিষ্য দের জেগে থাকতে বলেন, কিন্তু তাঁরা তা পারেনি। প্রভু যীশু জেগে থাকার জন্য অনেক দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তাঁর শিষ্যদের সচেতন করেছেন। ঘুমন্ত অর্থাৎ মৃত বা নির্জীব অবস্থা।
ঘড়ির এলার্ম বেজে ওঠার পরেও অনেক সময় আমরা উঠিনা। আর দুই মিনিট বা তিন মিনিট একটু ঘুমিয়ে নিই, তারপরে উঠবো। কিন্তু আর উঠতে পারিনা। যখন উঠি তখন হয়তো অনেক দেরী হয়ে যায়। আমাদের আত্মীক জীবনও ঠিক সেই প্রকার।
"অতএব জাগিয়া থাক; কেননা তোমরা সেই দিন বা সেই দণ্ড জান না।
(মথি। 25:13 BENGALI-BSI)।
সাপ কাটলে সেই ব্যক্তিকে জাগিয়ে রাখা হয়, ঘুমিয়ে পড়লে তার প্রাণ সংশয় বেশী হয়ে যায়, কারণ বিষ তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে।
দিয়াবল বা শয়তান আমাদের সকল কে কেটেছে, ঘুমিয়ে পড়লেই আমাদের আত্মীক মৃত্যু অনিবার্য্য।
আত্মা তে জেগে থাকো। প্রভু যীশুর জীবনে তা পরিষ্কার ভাবে ফুটে উঠেছে। যখন তিঁনি শয়তান দ্বারা পরীক্ষিত হন প্রান্তরে। তিঁনি আত্মাতে জাগ্রত ছিলেন বলেই শয়তান শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃত করেও প্রভু যীশু কে পরাস্ত করতে পারেনি। প্রভু যীশু শাস্ত্র দ্বারাই শয়তান কে পরাস্ত করেছিলো।
শয়তান আজও ঠিক এই ভাবেই অনেক ঘুমন্ত বিশ্বাসী কে যারা শাস্ত্র প্রায় পড়েই না । হয়তো সপ্তাহে,,,,মাসে,,,,,বছরে কখনো পড়ে এমন বিশ্বাসীদের শাস্ত্র দ্বারাই ভ্রান্ত করে রেখেছে। অনেক ভ্রান্ত মন্ডলী দেখা যায় এখন। এইসকল ভ্রান্ত মন্ডলীর শিকার এই সকল ঘুমন্ত বিশ্বাসী।
একটি ছোট্ট বাচ্চা হয়তো কোনো বিষয় জিদ করে কোনো খেলনা হাতের মুঠোয় চেঁপে শক্ত করে ধরে রেখেছে। কিছুতেই সে ওটা ছাড়বেনা। কিন্তু যেই ঘুমিয়ে পড়লো, আস্তে আস্তে তার হাতটা শিথিল হয়ে গেল এবং সেই খেলনা টা পড়ে গেল কিন্তু সেই বাচ্চা টা জানতেই পারলোনা। এতো জিদ করে যেটা সে ধরে রেখেছিল, সেটা আর ধরে রাখতে পারলোনা। বাইবেল বলে যে মোশী আত্মীক ভাবে সতর্ক না থাকার দরুন পাহাড় কে আঘাত করলেন এবং কতবড় আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হলেন।
প্রকাশিত বাক্যের 2 অধ্যায় 18 থেকে 28 এর মধ্যে আমরা লক্ষ্য করি যে প্রভু যীশু বলছেন প্রভাতীয় তারা অল্প কয়েকজন মাত্র দেখবে। অর্থাৎ ঘুমন্ত বিশ্বাসী সে সুযোগ হারাবে।
মালাখি 4:2 পদ আমাদের জানাচ্ছে যে, "তোমাদের প্রতি ধার্মিকতার সূর্য্য উদিত হইবে"।
ভোরের তারা দেখার জন্য ভোরে উঠতে হবে। মণ্ডলীকে রাতের ঘন আঁধারের মধ্যে দিয়ে, দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। জেগে থাকতে হবে তবেই সে ধার্মিকতার সূর্য্যকে দেখতে পাবে। কিন্তু বর্তমান মন্ডলী দুঃসময়ের মধ্যে প্রবেশ করতেই চায়না।
এখন বেশিরভাগ মন্ডলীর মধ্যে পাপ, দুঃখ কষ্ট, যাতনা, নিপীড়ন সমন্ধে প্রচার নেই। তাহলে লোক বেশি আসবেনা। তাই চিহ্ন চমৎকার, যীশুতে এসো তাহলে সব কিছু হয়ে যাবে। রোগ থেকে মুক্তি পাবে। এইসকল প্রচার যে মণ্ডলীতে বেশি, সেখানে অনেক ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
আমাদের শরীরে যখন কোনো রোগ হয় তা তখনই ধরা পড়েনা। যতক্ষন না কোনো উপসর্গ দেখা যায় আমাদের শরীরের মধ্যে। ব্যথা, যন্ত্রনা, শারীরিক দুর্বলতা এসবের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের রোগকে চিহ্নিত করতে পারি। ঠিক তেমনই ভাবে যে বিশ্বাসীর জীবনে দুঃখ, কষ্ট, তাড়না, পরীক্ষা, যাতনা না আসবে। সে কখনোই অনুভব করতে পারবে না সে কি আত্মীক ভাবে ঘুমিয়ে আছে। না জেগে আছে।
জীবনে দুঃখ, কষ্ট, যাতনা, তাড়না, পরীক্ষা এই সমস্ত কিছুর ঝড় তুফান আসবেই আসবে। কিন্তু মনে রাখবেন আপনার নৌকায় প্রভু যীশু আছেন।
"তোমার যাহা আছে, তাহা দৃঢ় রূপে ধরিয়া রাখো"। (প্রকাশিত 2:5)
এই কথার দ্বারা বোঝা যায় যে, প্রভুর আগমনের পূর্বে বিশ্বাসে স্থির থাকা কঠিন ব্যাপার হবে। তাই প্রভু যীশু বার বার চেতনা দিয়েছেন জেগে থাকো। অনেক দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তিঁনি শিক্ষাও দিয়েছেন।
নিদ্রিত বিশ্বাসী শিথিল হয়ে পড়বে। দৃঢ় রূপে ধরে থাকতে পারবে না।
প্রভু যীশু আরও বলেছেন,
"কিন্তু যে কেহ শেষ পর্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রান পাইবে। (মথি 24:13)
"আমি তাহার নাম কোনো ক্রমে জীবন পুস্তক হইতে মুছিয়া ফেলিব না"। (প্রকা: 3:5)
অর্থাৎ পরিত্রান পাওয়ার পরও অনেক বিশ্বাসী পরিত্রান হারাবে। পরিত্রান পাওয়ার পর জীবন পুস্তকে নাম লেখানোর পরও অনেক বিশ্বাসীর নাম আবার মুছে ফেলা হবে।
ভোটার কার্ডে নাম ওঠার পরেও দীর্ঘ সময় ধরে যদি তা update করা না হয়, যদি ভোট না দেওয়া হয়। তাহলে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়। ভোটার কার্ড এর আর কোনো value থাকেনা। invalid হয়ে যায়।
ঠিক তেমনি পরিত্রান পাওয়ার পর, জীবন পুস্তকে নাম লেখার পরেও তা মুছে ফেলে দেওয়া হয় যদি বিশ্বাসী ঘুমিয়ে পড়ে।
প্রভুর এক ভক্ত দাস বলেছেন, "যদি তুমি আত্মাতে জীবিত থাকো, তাহলে এক ঘন্টায় তুমি অনেক কিছু করতে পারো, যা করতে সারাজীবন লাগবে সাধারণ ভাবে জীবিত থেকে।"
মিশর থেকে কনান দেশের যাত্রা 11 দিনের পথ ছিল। কিন্তু সেই ইস্রায়েল জাতির লেগেছিলো 40 বছর। তারা সকলে প্রান্তরেই মারা গিয়েছিল। তাদের সন্তানসন্ততি রা প্রবেশ করেছিল। যিহশূয় ও কালেব ছাড়া। আজ বিশ্বাসী যাত্রা শুরু করে তো ঠিক ভাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত্য পৌঁছাবে কয়জন? যারা জেগে আছে শুধু মাত্র তাঁরাই।
প্রভু যীশু যখন জৈতুন পর্বতের উপরে বসে ছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা বিরলে তাঁর কাছে এসে জানতে চেয়েছিল তাঁর আগমনের চিহ্ন কি? মথি 24 অধ্যায়ে আমরা সেই সকল চিহ্নের বিবরণ দেখতে পাই। প্রভু যীশুর সেই বিবরণ অনুযায়ী আমরা তাঁর আগমনের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছি। সুতরাং আমরা যদি এই মুহূর্তে ঘুমিয়ে পড়ি তাহলে প্রভাতীয় তারা হয়তো আর দেখতে পাবোনা। প্রভু যীশু কোন দণ্ডে আসবেন আমরা তা জানতেই পারবোনা।
প্রভুর এক ভক্ত দাসের একটি বিখ্যাত গানের কথা মনে পড়ে যায়:-
"জেগে থাকো বলেন প্রভু, করো সদা প্রার্থনা....

Wake-up
 আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.

Comments

Popular posts from this blog

একজন ভাল মা অথবা বাবা হওয়া সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?

কিভাবে আমি নিশ্চিত জানতে পারি, মরে গেলে পর আমি স্বর্গে যাব?

প্রশ্ন: মৃত্যুর পর আপনি কোথায় যাবেন?

আমি কিভাবে ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি?

করোনা ভাইরাসের জন্য শারীরিক ও আত্মিক প্রস্তুতি

প্রশ্ন: যীশু খ্রীষ্ট কে?

পর্ণোছবি (অশ্লীল ছবি) সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে? পর্ণোছবি দেখা কী পাপ?

প্রশ্ন: বাইবেল কি সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য?

মৃত্যুর পরে কি কোন জীবন আছে?

খ্রীষ্টীয় পরিত্রাণের উদ্দেশ্য: প্রভু যীশুর প্রতিমূর্তির মত হওয়া

Popular Posts

একজন ভাল মা অথবা বাবা হওয়া সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?

কিভাবে আমি নিশ্চিত জানতে পারি, মরে গেলে পর আমি স্বর্গে যাব?

প্রশ্ন: মৃত্যুর পর আপনি কোথায় যাবেন?

আমি কিভাবে ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি?

করোনা ভাইরাসের জন্য শারীরিক ও আত্মিক প্রস্তুতি

প্রশ্ন: যীশু খ্রীষ্ট কে?

পর্ণোছবি (অশ্লীল ছবি) সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে? পর্ণোছবি দেখা কী পাপ?

প্রশ্ন: বাইবেল কি সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য?

মৃত্যুর পরে কি কোন জীবন আছে?

খ্রীষ্টীয় পরিত্রাণের উদ্দেশ্য: প্রভু যীশুর প্রতিমূর্তির মত হওয়া