দুষ্টলোকের সফলতায় দুশ্চিন্তা করা বা ঈর্ষান্বিত হওয়ার কারণ নাই
ভূমিকা : আমার বন্ধু সকালে বলতে ছিল " কেন দুষ্টরা সফল হয় "। প্রশ্নটা অনেক ভাববাদী ও ঈশ্বর ভক্তদের করতে পবিত্র বাইবেলে দেখা গেছে । যেমন :
যিরমিয় ভাববাদী ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন ,
" হে সদাপ্রভু, আমি যখন তোমার সহিত বিবাদ করি, তুমিই ধর্মময়; তথাপি তোমার সহিত বাদানুবাদ করিব। দুষ্ট লোকদের পথ কেন কুশলযুক্ত( prosper) হয়? যাহারা অতিশয় বিশ্বাসঘাতক, তাহারা কেন শান্তিতে থাকে?"
ঈশ্বরের লোক ইয়োবও প্রশ্ন করেছিলেন ,
"দুর্জনেরা কেন জীবিত থাকে, কেন বৃদ্ধ হয়, আবার ঐশ্বর্যে বীর্যবান হয়?"
তারা সবাই দুষ্টদের উত্থানে ঈশ্বরের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যেটা স্বাভাবিক । আমরাও তাই করি।
আমাদের এইও মনে রাখা উচিত ,ঈশ্বর জাগতিক ভাবে অনেককে আশীর্বাদ করেন। যেমন : অব্রাহাম, যোষেফ, রাজা দায়ুদ , রাজা শলোমন ও রাণী ইষ্টের। ঈশর যখন দেন মনোদুঃখ পূর্বক দেন না । এর পিছনে কারণও থাকে যা পৌল ২ তিমথীয় ৬ অধ্যায় নির্দেশনা দিয়েছেন ।
অন্যদিকে আমরা দুষ্টদের উন্নতি দেখি যা সবার জন্য ধ্বংসাত্মক । তাদের দ্বারা পৃথিবীতে অনেক নিষ্ঠুরতা, অসারতা , ভ্রান্ত পথ -মত প্রচারণা, প্রতারণা, অবিশ্বস্ত যৌনাচার , ড্রাগ ডিলার সহ অন্যান্য পাপের উৎপাদকের কর্ম তাদের দ্বারা সাধিত হয় । অনেক সময় তাদের নিয়ে বিশ্বাসীদের ভয় , ঈর্ষা ও দুশ্চিন্তা তৈরী হয় ।
🛑🌏🛑কিন্তু প্রভুর বাক্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য খ্রীষ্টভক্তদের অনেকভাবে সান্ত্বনা দেয় যা আমি সংক্ষেপে আলোচনা করব :
প্রথমতঃ দুষ্টদের উত্থান ক্ষণস্থায়ী: সাধু দায়ুদ বলেছেন ," আমি দুষ্টকে মহাক্ষমতাশালী দেখিয়াছি, উৎপত্তি স্থানের সতেজ বৃক্ষের ন্যায় প্রসারিত দেখিয়াছি।কিন্তু আমি সেই পথে গেলাম, দেখ, সে নাই, আমি অন্বেষণ করিলাম, কিন্তু তাহাকে পাওয়া গেল না।" (গীত: ৩৭ : ৩৫-৩৬)। অনেক দুষ্ট ফৌরণের বা রাজা
হেরোদের মত যাদের উত্থান হয়েছে তাদের ঈশ্বর শেষ করে দিয়েছেন ।
হেরোদের মত যাদের উত্থান হয়েছে তাদের ঈশ্বর শেষ করে দিয়েছেন ।
দ্বিতীয়তঃ দুষ্টদের শেষ ফল দেখার জন্য প্রভুর গৃহে আসুন : গীত ৭৩ এর লেখক দুষ্টদের উত্থানে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত ছিলেন । তিনি দুষ্টদের গর্ব, অহংকার, ঈশ্বরের প্রতি বিদ্বেষ ও অবিশ্বাস দেখিয়েছেন । তাই গীত লেখক আসপ বলেছিলেন ,
🌏🛑🌏"কারণ যখন দুষ্টদের কল্যাণ দেখিয়াছিলাম, তখন গর্বিতদের প্রতি ঈর্ষা করিয়াছিলাম।
কেননা তাহারা মৃত্যুকালে যন্ত্রণা পায় না, বরং তাহাদের কলেবর হৃষ্টপুষ্ট।
মর্ত্যের ন্যায় কষ্ট তাহাদের হয় না; মনুষ্যের মত তাহারা আহত হয় না।
দেখ, ইহারাই দুর্জন, ইহারা চিরকাল নির্বিঘ্নে থাকিয়া ধন বৃদ্ধি করিয়াছে।" (গীত ৭৩:৩-৫,১২)
এ সমস্ত বিষয়ে ধ্যান করার পরে তিনি ঈশ্বরের গৃহে যাওয়ার জন্য চিন্তা করেছিলেন যেখানে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দুষ্টদের পরিণাম :
তিনি বলেছেন ,
🎀"যাবৎ আমি ঈশ্বরের ধর্মধামে প্রবেশ না করিলাম, ও তাহাদের শেষ ফল বিবেচনা না করিলাম।" (গীত ৭৩: ১৭ পদ)
প্রকৃত পক্ষে ঈশ্বর তাদের পিচ্ছিল স্হানেই রেখেছেন । ঈশ্বরের গৃহে এসে এই সান্ত্বনা পেয়েছিলেন ,
➡️" তুমি তাহাদিগকে পিচ্ছিল স্থানেই রাখিতেছ, তাহাদিগকে বিনাশে ফেলিয়া দিতেছ।" (গীত ৭৩:১৮)
➡️"নিদ্রা ভঙ্গ হইলে পর যেমন স্বপ্ন তুচ্ছ হয়, তেমনি, হে প্রভু, তুমি জাগিলে তাহাদের মায়াপুত্তলিকে তুচ্ছ করিবে।" (গীত ৭৩: ২০)
➡️"কেননা দেখ, যাহারা তোমা হইতে দূরে থাকে, তাহারা বিনষ্ট হইবে; যে সকল লোক তোমা হইতে অপসরণ করিয়া ব্যভিচার করে, সেই সকলকে তুমি উচ্ছিন্ন করিয়াছ।" (গীত ৭৩:২৭)
প্রভুর গৃহে কিভাবে গীত লেখক আসফ বুঝতে বুঝতে পেরেছিলেন ? ( Endowring Word থেকে)
ক) প্রার্থনা ও আরাধনার মধ্য দিয়ে : ঈশ্বরই সমস্ত বিষয়ের কেন্দ্র । এর মধ্য দিয়ে ঈশ্বরীয় জ্ঞান ও অনন্তকাল সম্পর্কে জেনেছিলেন ।
খ)ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ করে : ঈশ্বরের বাক্য ডীবন্ত ও কার্যসাধক। ঈশ্বর যা প্রতিজ্ঞা করেছেন তা করতে সমর্থ । তিনিই ন্যায় বিচারক।
গ)বলিদান : বলিদানের শিক্ষা দেয়, ঈশ্বর পাপ খুবই গুরুত্বের সাথে দেখেন। নিষ্পাপ পশু কিভাবে পাপের প্রায়শ্চিত্তের শিক্ষা দেয় তা জানতেন । দুষ্টরা সেই পথ জানে না ও মানে না ।
🛑🎀🌏প্রকৃত দুষ্ট কারা : যারা সুসমাচারের অবাধ্য । সমস্ত মানুষকে দুষ্টতা থেকে মন পরিবর্তনের আজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে । ঈশ্বর একটি দিন ধার্য করেছেন যে দিনে তাঁর নিযুক্ত ধার্মিক ও ন্যায় বিচারক প্রভু যীশু দ্বারা বিচার করবেন( প্রেরিত ১৭:৩১)। তার প্রকৃত প্রমাণ খ্রীষ্টের মৃত্যু ও পুনরুত্থান ।
যারা এই বাণী বিশ্বাস ও অনুতাপে তাঁকে মুক্তিদাতা ও প্রভু হিসাবে গ্রহণ করবেন তাদের দন্ডাজ্ঞা করা হবে না ( রোমীয় ৮:১)। কিন্তু যারা খ্রীষ্টের সুসমাচারের অবাধ্য তাদের সমুচিত দন্ড দিবেন এবং যারা খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কষ্ট দেয় তাদেরও একই পরিণাম অপেক্ষা করছে ।প্রেরিত পৌল এ সম্পর্কে বলেছেন,
যারা এই বাণী বিশ্বাস ও অনুতাপে তাঁকে মুক্তিদাতা ও প্রভু হিসাবে গ্রহণ করবেন তাদের দন্ডাজ্ঞা করা হবে না ( রোমীয় ৮:১)। কিন্তু যারা খ্রীষ্টের সুসমাচারের অবাধ্য তাদের সমুচিত দন্ড দিবেন এবং যারা খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কষ্ট দেয় তাদেরও একই পরিণাম অপেক্ষা করছে ।প্রেরিত পৌল এ সম্পর্কে বলেছেন,
" ক্লেশ পাইতেছ যে তোমরা, তোমাদিগকে আমাদের সহিত বিশ্রাম দিবেন, [ইহা তখনই হইবে] যখন প্রভু যীশু স্বর্গ হইতে তাঁহার পরাক্রমশালী দূতগণের সহিত জ্বলন্ত অগ্নিবেষ্টনে প্রকাশিত হইবেন,
এবং যাহারা ঈশ্বরকে জানে না ও যাহারা আমাদের প্রভু যীশুর সুসমাচারের আজ্ঞাবহ হয় না, তাহাদিগকে সমুচিত দণ্ড দিবেন।"
এবং যাহারা ঈশ্বরকে জানে না ও যাহারা আমাদের প্রভু যীশুর সুসমাচারের আজ্ঞাবহ হয় না, তাহাদিগকে সমুচিত দণ্ড দিবেন।"
(২ থিষলী-১:৭,৮)।
🛑🎀🌏উপসংহার: আদমের সন্তান হেবল থেকে শুরু করে ধার্মিকদের উপরে দুষ্টদের নিষ্ঠুরতা, গর্ব, অহংকার ও অত্যাচার চলছে। দুষ্টদের অনেক দিক দিয়ে উত্থানও ঘটছে যা বিশ্বাসীদের কষ্ট দেয় ও ভাবিয়ে তুলে। কিন্তু প্রভুর বাক্য সান্ত্বনা দেয় , দুষ্টদের উত্থান অস্হায়ী ও তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী । অতএব, খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের প্রভুর সাথে থাকা বাঞ্ছনীয় । কেননা প্রভুর বাক্য এই কথায় বলে,
" কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে থাকা আমারই পক্ষে মঙ্গল; আমি প্রভু সদাপ্রভুর শরণ লইলাম, যেন তোমার সমস্ত ক্রিয়া বর্ণনা করিতে পারি।"
(গীত ৭৩:২৮)।
আমেন।।
(গীত ৭৩:২৮)।
আমেন।।
Comments
Post a Comment