নকল করাই শয়তানের ধর্ম
ইস্রায়েল রাজ যারবিয়াম রাজার জীবন থেকে শিক্ষা :--
রাজা শলোমনের অপরাধের জন্য ঈশ্বর কতৃক শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছিল। এই কারণে তাঁর সংযুক্ত রাজ্য ভেঙে দুই ভাগ বিভক্ত হয় যা উত্তর রাজ্য ও দক্ষিণ রাজ্য যা যথাক্রমে ইস্রায়েল ও যিহূদা নামে পরিচিত । ঈশ্বর শলোমনের দাস যারবিয়ামকে ১০ বংশের উপরে রাজত্ব করার অধিকার দেন । রাজত্ব পাওয়ার পর যারবিয়াম ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশনা না মেনে নিজের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য " স্বর্ণময় দুই গোবৎস নির্মাণ করে বলেন ,
"এই তোমার দেবতা যিনি মিসর দেশের হইতে তোমারে বাহির করিয়া আনিয়াছেন "।
( ১ রাজা ১২:২৮)
অনেকটা মোশীর ভাই হারুন যেভাবে গোবৎসের মূর্তি বানিয়েছিল তদ্রূপ গোবৎসের মূর্তি তৈরী করে জন সাধারণের জন্য নকল ও মিথ্যা ধর্মের প্রবর্তন করেন ( যাত্রা ৩২:৪) পদ। রাজা যারবিয়াম মূর্তিদ্বয় বৈথেল ও দান নামক জায়গায় স্থাপন করেন যেন উত্তর রাজ্য ইস্রায়েলেল জনসাধারণ মিথ্যা ঈশ্বরকে আরাধনা করতে পারে । তার প্রধান কারণ ছিল ইস্রায়েলের প্রজারা যেন দক্ষিণ রাজ্যে যিহূদার রাজধানী ঈশ্বরের মনোনীত আরাধনার স্হান যিরূশালেমে আসতে না পারে। রাজা যারবিয়ামের ভয় ছিল প্রজারা যদি যিরূশালেমে যায় তাহলে তারা হয়ত রাজা শলোমনের পুত্র রহবিয়ামের আনুগত্য স্বীকার করবে।
শুধু তাই নয় তিনি নতুন ধর্মীয় উৎসবের সূচনা করেন যা মোশীর ব্যবস্থায় উল্লেখিত সমাগমতাম্বুর পর্বের নকল হিসাবে দাঁড় করান । ( তুলনীয় যাত্রা ৩৪: ২২, ২৩ ; লেবীয় ২৩: ৩৩, ৩৭ , ৩৯- ৪০) পদ । )
🌎🔶️🌎আমাদের লক্ষ্যনীয বিষয় :-
প্রথমতঃ রাজা যারবিয়াম সত্য ঈশ্বরের নাম করে মিথ্যা ঈশ্বরের প্রবর্তন করেছেন । অনেকে দাবি করতে পারেন তারা অব্রাহামের, ইসাহাকের ও যাকোবের ঈশ্বরকে অনুসরনের করতে পারে কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য তুচ্ছ করে নয়।ঈশ্বর বাক্য যা বলেননি তা করা মহাঅন্যায়। ঈশ্বর তাঁর গৌরব কাওকে দিবেন না । কেননা প্রভুর বাক্য বলে "আমি সদাপ্রভু, ইহাই আমার নাম; আমি আপন গৌরব অন্যকে, কিম্বা আপন প্রশংসা ক্ষোদিত প্রতিমাগণকে দিব না।"
[যিশাইয় ৪২:৮]
[যিশাইয় ৪২:৮]
দ্বিতীয়তঃ শয়তানের বাক্য ঈশ্বরের বাক্য চালিয়ে দেওয়া ক্ষমাহীন পাপ কারণ তা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে বিকৃত করে। সত্যের আত্মা অনুপ্রেরণায় পবিত্র শাস্ত্র লেখা হয়েছে । প্রভুর বাক্য সাক্ষ্য দেয়,
"ঈশ্বরের প্রত্যেক বাক্য পরীক্ষাসিদ্ধ; তিনি আপনার শরণাপন্ন লোকদের ঢালস্বরূপ।তাঁহার বাক্যকলাপে কিছু যোগ করিও না; পাছে তিনি তোমার দোষ ব্যক্ত করেন, আর তুমি মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হও।"
[হিতো ৩০:৫,৬]
"ঈশ্বরের প্রত্যেক বাক্য পরীক্ষাসিদ্ধ; তিনি আপনার শরণাপন্ন লোকদের ঢালস্বরূপ।তাঁহার বাক্যকলাপে কিছু যোগ করিও না; পাছে তিনি তোমার দোষ ব্যক্ত করেন, আর তুমি মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হও।"
[হিতো ৩০:৫,৬]
উপরোক্ত পদের আলোকে রাজা যারবিয়াম ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে নিজে ঈশ্বরের গৌরব গরুর মূর্তির কাছে বিনিময় করেন যা ঘৃণিত পাপ।
আজ আপনি কি করছেন? প্রকৃত ঈশ্বরের সাথে কি গৌরব পরিবর্তন করেছেন ? আজই জীবন্ত ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন যা তিনি প্রভু যীশুর মধ্য দিয়ে জগতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন ( প্রেরিত ৪:১২)।
তৃতীয়তঃ নতুন পর্বের শুরু : রাজা যারবিয়াম ইস্রায়েল জাতির পালিত পবিত্র পর্বের আলোকে নকল ধর্মের অনুষ্ঠান শুরু করে । এটি সত্য যে , যে কোন ধর্মের সাথে বিভিন্ন পর্বের সম্পর্ক আছে । রাজা যারবিয়ামও তাই করলেন । তিনি মানুষের কাছে সত্য পর্বের পরিবর্তে মিথ্যা পর্বের সূচনা করে গেছেন । আজও আমরা তার ব্যতিক্রম দেখিনা । ইস্রায়েল জাতিকে ঈশ্বর নিস্তার পর্বসহ বেশ কয়েকটি পর্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। পুরাতন নিয়মের নিস্তার পর্ব প্রভু যীশুর মানবজাতিকে পাপ থেকে মুক্ত করার কথা প্রকাশ করে। যা প্রভু যীশু তাঁর পবিত্র রক্তের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করেছেন যা আমাদের প্রতিদিনই স্মরণ করা উচিত। তাঁর জন্য জীবন থেকে মিথ্যার তাড়ী দূর করা দরকার । প্রভুর বাক্য বলে ,
" পুরাতন তাড়ী বাহির করিয়া দেও; যেন তোমরা নূতন তাল হইতে পার- তোমরা ত তাড়ীশূন্য। কারণ আমাদের নিস্তারপর্বীয় মেষশাবক বলিকৃত হইয়াছেন, তিনি খ্রীষ্ট।"
(১ করি: ৫:৭)
(১ করি: ৫:৭)
প্রয়োগ : সাধুপৌল সতর্ক করে বলেছিলেন শয়তান স্বগৌরবে দূতের রূপ ধারন করতে পারে ।তিনি বলেন ,
"আর ইহা আশ্চর্য নয়,কেননা শয়তান নিজেই দ্বীপ্তময দূতের বেশ ধারন করে । সুতরাং তাহার পরিচারকেরও যে ধামিকতার পরিচালকদের বেশ ধারন করে । ইহা মহৎ বিষয় নয় । তাহাদের পরিণাম তাহাদের ক্রিয়ানুসারে হইবে ।" (২য় করি ১১: ১৪--১৫ )
ঈশ্বর রাজা যারবিযামকে তাহার মিথ্যা ধর্ম প্রবর্তনের জন্য শাস্তি দিয়ে ছিলেন । শুধু তাকে নয় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে শাস্তি ঘোষনা হয়ে ছিল । ইতিহাস থেকে দেখা যায় উত্তর রাজ্য ইসরাইলের ২০ জন রাজা রাজত্ব করেছিলেন । সবাই রাজা যারবিয়ামের পথ অনুসারে জীবনযাপন করে ছিলেন । ( ৯৩১ খ্রীষ্ট পূর্ব থেকে ৭২২খীষ্ট পূব্দ ) ।
তাই ঈশ্বর জাতিকে ধ্বংস করার জন্য সেই সময়ের পরাশক্তি অশুরিয়দের ব্যবহার করেন । আমরা দেখতে পাই ৭২২খীষ্টাব্দ উওর রাজ্য ইসরাইলের সম্পূর্ণ পতিত হয় ( ২য় রাজা: ১৭ অধ্যায়। )।
তাই ঈশ্বর জাতিকে ধ্বংস করার জন্য সেই সময়ের পরাশক্তি অশুরিয়দের ব্যবহার করেন । আমরা দেখতে পাই ৭২২খীষ্টাব্দ উওর রাজ্য ইসরাইলের সম্পূর্ণ পতিত হয় ( ২য় রাজা: ১৭ অধ্যায়। )।
বর্তমানে এ ঘটনা কিভাবে দেখব ?
যে কেউ রাজা যারবিয়ামের মত সত্য ঈশ্বরের নামে মিথ্যা ঈশ্বরকে পরিচয় করে দিতে পারে কিন্তু তার দাবী পবিত্র শাস্ত্রের বাণী দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে ।
সেই জন্য আজকে আমাদের কেউ যদি বলে তারা অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসাহাকের ও যাকোবের ঈশ্বরের কথা আমাদের বিশ্বাস করতে বলে , তাহলে বাক্যের আলোকে পরীক্ষা করতে হবে । তা না হলে আমরা রাজা যারবিয়ামের মতই চরম ভ্রান্তির মধ্যেই আছি যার কোন প্রতিকার নেই ।
এ শেষ কালে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে ,ঈশ্বর আমাদের তাঁর পুত্র যীশুর মধ্য দিয়ে শেষ বাণী দিয়েছেন। তাঁর পাতিত রক্তের মধ্য দিয়েই পরিত্রাণের শেষ পথ তৈরী করেছেন । মনে রাখতে হবে সবাই সত্য ঈশ্বরের আরাধনা দাবী করতে পারে কিন্তু সব সত্য সত্য না ।
তাই পাঠকবর্গকে অনুরোধ করব একটু Home Work করার জন্য যেন বুঝতে পারেন সত্যে আছেন কি না।
তাই পাঠকবর্গকে অনুরোধ করব একটু Home Work করার জন্য যেন বুঝতে পারেন সত্যে আছেন কি না।
ঈশ্বর তাঁর প্রদত্ত করুনা অনুসারে সত্য জানতে সাহায্য করুন।। আমেন।।

Comments
Post a Comment