"যিহূদীদের মধ্য হইতেই পরিত্রাণ " কেন ?
ভুমিকা:- যিহুদী আদি পুরুষ ,বিশ্বাসীদের আদি পিতা অব্রাহামকে ঈশ্বর মনোনীত করেছিলেন যেন তিনি একটি নতুন জাতির স্থপতি হতে পারেন । ঈশ্বর তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন : প্রতিশ্রুত দেশ, জাতি, ও নাম দিবেন (আদি ১২:১-২) । এই সকল প্রতিজ্ঞা ছাড়াও ঈশ্বর অব্রাহামের বংশকে ঐশ্বরিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ঈশ্বরীয় ব্যবস্থা, সত্য আরাধনার প্রকৃতি ও তাঁর বংশের মধ্য দিয়ে সমস্ত জাতির মানুষকে পরিত্রাণের আশীর্বাদ দিবেন। সাধু পৌল পরিস্কার করে আমাদের বুঝিয়েছেন সেই বংশ খ্রীষ্ট (গালাতীয় ৪:১৭) । যিনি মাংসের সমন্ধে একজন ইস্রায়েলীয়, যিহূদা ও দায়ূদের বংশজাত , একজন যিহুদী, প্রতিজ্ঞাত মসীহ, অনন্তকালীন রাজা ও জগতের উদ্ধারকর্তা যার মধ্য দিয়ে সমস্ত কিছুই সৃষ্টি হয়েছে । তিনিই হচ্ছেন আমাদের প্রভু যীশু যিনি তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে সেই পরিত্রাণ রচনা করেছেন যেন তাঁর প্রজাগণ জীবন্ত ঈশ্বরের আরাধনা করতে পারে।
আজকে এই প্রবন্ধে "যিহুদীদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ" বিষয়টি ঐতিহাসিক ও ধর্মতান্ত্রিক দিক থেকে আলোচনা করা হবে ।
প্রথমেই জেনে নেই প্রভু যীশুর এই বাক্যের পটভূমিকা :
প্রভু যীশু যিহুদা প্রদেশে পরিচর্যা কাজ শেষ করে গালীল প্রদেশ যাত্রার সময় শমরীয় প্রদেশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুখর নামে একটি গ্রামের কাছে একটি কুয়ার কাছে ক্লান্ত হওয়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন । তখন শিষ্যরা খাবার কিনতে গ্রামে গেলেন। যীশু যখন একা বসে অপেক্ষা করতে ছিলেন তখন একজন শমরীয় মহিলা দুপুর বেলা জল তুলতে আসেন তখন যীশু তার কাছে জল চায়। যীশুর প্রকৃত ইচ্ছা ছিল শমরীয় মহিলাকে তিনিই যে জীবন জলের উৎস তার সুসমাচার প্রচার করা । সেই প্রেক্ষিতে মহিলার সাথে যীশুর "জল" চাওয়া নিয়ে যীশুর কথা আরম্ভ হয় ।
যীশু শমরীয় মহিলাকে পরিস্কার জানিয়েছিলেন
✝প্রকৃত জীবন জল তিনিই , যিনি মানুষের অনন্ত জীবনের পিপাসা মিটিয়ে অনন্ত জীবন দান করে ।
পরবর্তীতে শমরীয় মহিলার সাথে শমরীয়ার আরাধনার প্রকৃতির সাথে যীশুর যিহূদীদের আরাধনা প্রসঙ্গে আলোচনা হয় ।
সেই সময় শমরীয়া মহিলা বলেছিল ,
"আমাদের পিতৃপুরুষেরা এই পর্বতে ভজনা করিতেন, আর আপনারা বলিয়া থাকেন, যে স্থানে ভজনা করা উচিত, সে স্থানটি যিরূশালেমেই আছে।"
উত্তরে যীশু শমরীয় নারীকে বলেছিলেন ,
, ✝"হে নারি, আমার কথায় বিশ্বাস কর; এমন সময় আসিতেছে, যখন তোমরা না এই পর্বতে, না যিরূশালেমে পিতার ভজনা করিবে।"
✝তোমরা যাহা জান না, তাহার ভজনা করিতেছ; আমরা যাহা জানি, তাহার ভজনা করিতেছি, কারণ-
"যিহূদীদের মধ্য হইতেই পরিত্রাণ।"
[যোহন ৪:২০- ২২]
[যোহন ৪:২০- ২২]
প্রথমত:পরিত্রাণ দ্বারা যীশু কি বুঝিয়েছেন?
মূল গ্রীক বাইবেলে পরিত্রাণ (σωτηρία) শব্দের পূর্বে article "The" salvation( পরিত্রাণ) রয়েছে যার মধ্য দিয়ে মানব জাতির মুক্তির জন্য একটি মাত্র পথ রয়েছে । যেমন যীশু বলেছেন,
✝" যীশু তাহাকে বলিলেন, আমিই পথ ও সত্য ও জীবন; আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না।"
(যোহন ১৪:৬)
যীশুর শিষ্যরা তা নিশ্চিত করে বলেছিলেন,"
✝"আর অন্য কাহারও কাছে পরিত্রাণ নাই; কেননা আকাশের নিচে মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোন নাম নাই, যে নামে আমাদিগকে পরিত্রাণ পাইতে হইবে।"(প্রেরিত ৪:১২)
দ্বিতীয়ত : যীশু এখানে ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন যে যিরূশালেম বা গরীসীম পর্বতে( যেখানে শমরীয়রা উপাসনা করত) মানুষের আর উপাসনা করার প্রয়োজন পড়বে না কারণ কয়েক দশক পরেই তা ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং পুরাতন নিয়মের মন্দিরের পরিবর্তে ঈশ্বরের লোকেরা খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে পিতা ঈশ্বরের সত্যে ও আত্মায় ভজনা করবে ।
বাস্তবিক ৭০ খ্রিস্টাব্দে যিরুশালেম মন্দির রোমীয়দের দ্বারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয় । যে প্রকৃত শিক্ষা যীশু এখানে দিয়েছেন তা হল , আরাধনার জন্য এখন থেকে হস্ত নির্মিত মন্দির বা কোন নির্দিষ্ট স্হান নয় কিন্তু খ্রীষ্টই হবেন পরিত্রাণ ও আরাধনার কেন্দ্র বিন্দু। প্রকৃত আরাধনা শুধু নির্ভর করে খ্রীষ্টের প্রদত্ত পরিত্রাণের উপর। তাছাড়া প্রকৃত আরাধনা এমনি হতে হবে ,
"আর আমি নগরের মধ্যে কোন মন্দির দেখিলাম না; কারণ সর্বশক্তিমান প্রভু ঈশ্বর এবং মেষশাবক স্বয়ং তাহার মন্দিরস্বরূপ।"
(প্রকাশিত বাক্য ২১:২২)
এখন আমরা সংক্ষেপে শমরীয়ার ঐতিহাসিক ও তাদের ধর্ম সম্পর্কে জানব:
ㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡ
✝শমরীয় কারা : রাজা শলোমনের পাপের কারণে ইস্রায়েলের যুক্ত রাজ্য দ্বিখন্ডিত হয়ে উত্তর রাজ্য ইস্রায়েল ও দক্ষিণ রাজ্য যিহুদা নামে প্রতিষ্ঠা পায় । উত্তর রাজ্য অর্থাৎ ইস্রায়েল প্রতিষ্ঠিত হয় রাজা শলোমনের কর্মচারী যারবিয়ামের মধ্য দিয়ে। তিনি তার রাজ্যে মূর্তি পূজার প্রচলন করেন । তার প্রজারা যেন যিরূশালেমে ভজনা করতে না যায় সেজন্য তিনি দান ও বৈথেলে মন্দির তৈরী করে গোবৎসের মূর্তি স্থাপন করে বলেন,
"অতএব রাজা মন্ত্রণা করিয়া স্বর্ণময় দুই গোবৎস নির্মাণ করাইলেন; আর তিনি লোকদিগকে কহিলেন, যিরূশালেমে যাওয়া তোমাদের পক্ষে বাহুল্যমাত্র, হে ইস্রায়েল, দেখ, এই তোমার দেবতা, যিনি মিসর দেশ হইতে তোমাকে বাহির করিয়া আনিয়াছেন।"
(১ রাজাবলি ১২:২৮)
পরবর্তীতে সমস্ত ইস্রায়েলের প্রতিটি রাজাই যারবিয়ামের পথ অনুসরণ করেন । তাই প্রভুর বাণী তাদের সম্পর্কে বলেছেন এভাবে,
"তাহারা আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আজ্ঞা ত্যাগ করিয়া আপনাদের জন্য ছাঁচে ঢালা প্রতিমা, দুই গোবৎস, নির্মাণ করিয়াছিল, আশেরা-মূর্তিও নির্মাণ করিয়াছিল, এবং আকাশের সমস্ত বাহিনীর কাছে প্রণিপাত ও বালদেবের সেবা করিত।"
(২ রাজাবলি ১৭:১৬)।
ইতিমধ্যে ঈশ্বর অনেক ভাববাদী পাঠিয়েছিলেন যেন জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফিরে আসে কিন্তু তারা ফিরেনি ।
তাই ঈশ্বর সেই সময়ের পরাশক্তি অশূরীয়দের দ্বারা ইস্রায়েল রাজ্যের সহ রাজধানী শহর শমরীয় ৭২২ খ্রী:পূ: পতিত হয় । সেই সময়ে অশুরীয়রা ইস্রায়েলীদের বন্দি করে অশুরে নিয়ে যায়।
অন্য দিকে, অশুরীয়রা অন্যান্য জাতিদের নিয়ে এসে শমরীয়াতে বসিয়ে দেওয়া হয় । এতে করে একটি মিশ্র জাতি ও নতুন ধর্মের সৃষ্টি হয়।
অন্য দিকে, অশুরীয়রা অন্যান্য জাতিদের নিয়ে এসে শমরীয়াতে বসিয়ে দেওয়া হয় । এতে করে একটি মিশ্র জাতি ও নতুন ধর্মের সৃষ্টি হয়।
সে সময়ের পরিবেশ সম্পর্কে পবিত্র বাইবেল বলে,
"তাহারা সদাপ্রভুকে ভয় করিত, আবার আপনাদের জন্য আপনাদের মধ্য হইতে উচ্চস্থলী সকলের যাজকদিগকে নিযুক্ত করিত; তাহারাই তাহাদের জন্য উচ্চস্থলীর গৃহে বলিদান করিত।"
সেকারণে সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণে একটি ধর্মের সূচনা হয় ।
✝প্রভু যীশুর সময়ে শমরীয়রা গরীসীম পর্বতে উপাসনা করত যা যিহুদী ধর্ম থেকে আলাদা ও তারা তাদের ধর্মে পৌত্তলিক ধর্মের মিশ্রণ ঘটায় । ইতিহাস এ কথা বলে বাবিলে ইস্রায়েল জাতির নির্বাসনের পরে যিহুদী ধর্ম ত্যাগী একজন যাজক যিনি সনবল্লবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন । তিনি যিহূদী ধর্ম পরিত্যাগ করে ভ্রান্ত ধর্মমতের শুরু করেন। এখানে বলা
প্রয়োজন তিনি ঈশ্বরভক্ত নহিমিয়ের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অনেক কাজ করেছিলেন ।
প্রয়োজন তিনি ঈশ্বরভক্ত নহিমিয়ের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অনেক কাজ করেছিলেন ।
※এখানে সুনিদিষ্ট ভাবে বলা প্রয়োজন শমরীয়দের ধর্মে শুধু পুরাতন নিয়মের প্রথম ৫টি পুস্তক গ্রহণ করেছিল যার কারণে তারা পুরাতন নিয়মের ঈশ্বরের ভবিষ্যত সম্বলিত অনেক বাণীই তারা জানত না বিধায় তারা ছিল অজ্ঞ । তাছাড়া বাকী পুস্তকগুলো গ্রহণ করার ইচ্ছা পোষনও করে নাই । যেহেতু তাদের কাছে পুরাতন নিয়মের পূর্ণ প্রকাশিত গ্রন্থ ছিল না তাই তারা সত্যে ঈশ্বরের আরাধনা করতে পারত না ।
তাই সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় ছিল তারা পৌওলিকতার বিভিন্ন বিধান সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ঈশ্বরের ঘৃণিত ব্যবস্থায় আরাধনা প্রচলন করেন যা আমরা পূর্বে দেখেছি।
তাই সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় ছিল তারা পৌওলিকতার বিভিন্ন বিধান সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ঈশ্বরের ঘৃণিত ব্যবস্থায় আরাধনা প্রচলন করেন যা আমরা পূর্বে দেখেছি।
■যীশুর সাথে শমরীয়া মহিলার সাথে আলোচনায় যীশু বুঝিয়েছেন প্রকৃত উপাসনায় স্থানের গুরুত্ব না , রীতিনীতিও না, কিন্তু ঈশ্বরকে ভালবাসা, ঈশ্বরকে সম্মান করা , তাঁর বাক্যর বাধ্য হওয়া ও অন্তর থেকে তার সেবা করাই মূল বিষয় ।
যীশু নিশ্চিত করেছিলেন প্রকৃত পক্ষে যিহূদীদের কাছে সত্য ঈশ্বরের প্রকাশ ঘটেছে তাই তিনি বলেছিলেন ,
----"আমরা যাহা জানি, তাহার ভজনা করিতেছি, কারণ যিহূদীদের মধ্য হইতেই পরিত্রাণ।" ( ২২ পদ)
C. K. Barrett তাঁর commentary তে এ পদ সম্পর্কে বলেছেন যে ,এই পদ দ্বারা যীশু একথা বুঝাননি যে যিহূদীরা সবাই পরিত্রাণ পাবে বরং তিনি বুঝিয়েছেন ঈশ্বরের মনোনয়নে ঈশ্বরের প্রকৃত জ্ঞান এসেছে যেন উপযুক্ত সময়ে যিহূদীদের মধ্য থেকে সমস্ত পৃথিবীতে পরিত্রাণ শুরু হয় ---------শেষকালীন পরিত্রাণ খ্রীষ্টের মধ্য দিয়েই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যখন যিহূদীরা খ্রীষ্টীয় মন্ডলীর কাছে তাদের অবস্থান হারাচ্ছে ।"
(Richard John Neuhaus , তাঁর article - Salvation from the Jews তে উল্লেখ করেছেন)
(Richard John Neuhaus , তাঁর article - Salvation from the Jews তে উল্লেখ করেছেন)
● আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এই যে আরাধনা ও পরিত্রাণ একটি অপরের পরিপূরক । তার অর্থ হচ্ছে পরিত্রাণ প্রাপ্ত লোক ছাড়া ঈশ্বরের কাছে কোন আরাধনার মূল্য নেই ।
✝এখন আমরা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব কেন যিহুদীদের মধ্যে থেকে পরিত্রাণ :
ㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡ
ㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡㅡ
✝প্রথমত:যিহূদী জাতি ঈশ্বরের মনোনীত জাতি :
---------------------
ইস্রায়েল জাতি বা যিহূদীদের সম্পর্কে মোশীর বলেছিলেন "
"কেননা তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র প্রজা; ভূতলে যত জাতি আছে, সেই সকলের মধ্যে আপনার নিজস্ব প্রজা করিবার জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকেই মনোনীত করিয়াছেন।"
(দ্বিতীয় বিবরন ৭: ৬) ।
তার পূর্বে ঈশ্বর অব্রাহামকে আহবান করে চুক্তি বা নিয়ম করেছিলেন যা তাঁর প্রতিজ্ঞাত পুত্র ইসহাক এবং তাঁর পুত্র যাকবের মধ্য দিয়ে বার বার স্মরণ করা হয়েছে । যাকবের নাম ঈশ্বর পরিবর্তিন করে ইস্রায়েল রাখেন । কনান দেশে দুর্ভিক্ষের কারণে ইস্রায়েলের পরিবার মিসরে গমন করে কিন্তু পরে তাঁরা মিসরের ফরৌণের দাসত্বে বন্দিত্বে দীর্ঘ সময় থাকেন যখন তারা ঈশ্বরের কাছে সর্বদা ক্রন্দন করত। তাই ঈশ্বর ভাববাদী মোশীর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনার মধ্য দিয়ে মিসরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেন । মোশির উত্তরসূরি যিহোশূয়ের মধ্য দিয়ে প্রতিজ্ঞাত কনান দেশে ইস্রায়েল জাতি বা যিহূদী জাতি প্রবেশ করে।
✝দ্বিতীয়ত : পরিত্রাণের পরিকল্পনা ঈশ্বর যিহুদীদের কাছে লিখিত শাস্ত্রের মধ্য দিয়ে দিয়েছেন ।মোশীর মধ্যে দিয়ে ব্যবস্থা পুস্তক , অন্যান্য লেখকদের মধ্যে দিয়ে ইতিহাস পুস্তক , রাজা দায়ূদের মধ্য দিয়ে গীতসংগীতা ও নবীদের মধ্য দিয়ে নবীদের পুস্তক দেওয়া হয়েছে । সবোপরি খীষ্টীয় সুসমাচারের বিষয়ক পুস্তকগুলো নতুন নিয়মে লিপিবদ্ধ হয়েছে যার মধ্য দিয়ে মানুষের জন্য ঈশ্বরের শেষ ও অনন্তকালীন পরিকল্পনার প্রকাশ দিয়েছেন
যেন শুধু যিহুদী না বরং যেন পৃথিবীর সমস্ত জাতি যেন পরিত্রাণ বিষয়ক জ্ঞান ও পরিত্রাণ লাভ করতে পারে ।
✝তৃতীয়ত: ঈশ্বরের বাক্য যিহূদীদের পবিত্র ভূমি থেকেই আসবে যা পরিত্রাণের জ্ঞান দান করে :
ঈশ্বর তাঁর নবী যিশাইয়ের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন ,"
"আর অনেক দেশের লোক যাইবে, বলিবে, চল, আমরা সদাপ্রভুর পর্বতে, যাকোবের ঈশ্বরের গৃহে গিয়া উঠি; তিনি আমাদিগকে আপন পথের বিষয়ে শিক্ষা দিবেন, আর আমরা তাঁহার মার্গে গমন করিব, কারণ সিয়োন হইতে ব্যবস্থা ও যিরূশালেম হইতে সদাপ্রভুর বাক্য নির্গত হইবে।" (যিশা ২ঃ৩)
মীখা ভাববাদীর কাছে একই বাক্য প্রকাশিত হয়েছে,
"আর অনেক জাতি যাইতে যাইতে বলিবে, চল, আমরা সদাপ্রভুর পর্বতে, যাকোবের ঈশ্বরের গৃহে গিয়া উঠি; তিনি আমাদিগকে আপন পথের বিষয়ে শিক্ষা দিবেন, আর আমরা তাঁহার মার্গে গমন করিব; কারণ সিয়োন হইতে ব্যবস্থা ও যিরূশালেম হইতে সদাপ্রভুর বাক্য নির্গত হইবে।" (মীখা ৪:২)
বাস্তবিক আমরা এ ভবিষ্যত বাণীর পূর্ণতা দেখতে পাই খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে পূর্ণতা এসেছে যেমনটি শাস্র বলে,
"ঈশ্বর পূর্বকালে বহুভাগে ও বহুরূপে ভাববাদিগণে পিতৃলোকদিগকে কথা বলিয়া, এই শেষ কালে পুত্রেই আমাদিগকে বলিয়াছেন।"
(ইব্রীয় ১:১)
তাছাড়া খ্রীষ্টই তাঁর আত্মার মধ্যে দিয়ে তাঁর শিষ্যদের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন যেন নতুন নিয়মের পুস্তকগুলো লেখা হয়।
এ সম্পর্কে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে । যেমন: যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেছেন,
"যাঁহাকে আমি পিতার নিকট হইতে তোমাদের কাছে পাঠাইয়া দিব, সত্যের সেই আত্মা, যিনি পিতার নিকট হইতে বাহির হইয়া আইসেন- যখন সেই সহায় আসিবেন- তিনিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিবেন।"
(যে।হন ১৫:২৬)
প্রেরিত পৌল বলেছেন তাঁর প্রচার বা শিক্ষা সম্পর্কে ,
"কেননা আমি মানুষের নিকট হইতে তাহা গ্রহণও করি নাই, এবং শিক্ষাও পাই নাই; কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের প্রত্যাদেশ দ্বারা পাইয়াছি।"
(গালাতীয় ১:১২)
✝চতুর্থত: যিহুদীদের কাছে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা গচ্ছিত হয়েছে । প্রভুর বাক্য এ কথা বলে,
"প্রথমতঃ এই যে, ঈশ্বরের বচনকলাপ তাহাদের নিকটে গচ্ছিত হইয়াছিল।"
(রোমীয় ৩:২) ।
তাছাড়া,
কারণ তাহারা ইস্রায়েলীয়; দত্তকপুত্রতা, প্রতাপ, ধর্মনিয়ম সকল, ব্যবস্থাদান, আরাধনা ও প্রতিজ্ঞাসমূহ তাহাদেরই,পিতৃপুরুষেরা তাহাদের, এবং মাংস অনুসারে তাহাদেরই মধ্য হইতে খ্রীষ্ট উৎপন্ন হইয়াছেন, যিনি সর্বোপরিস্থ ঈশ্বর, যুগে যুগে ধন্য, আমেন।"
(ইব্রীয় ৯:৪-৫)
ঈশ্বরের বাক্য মানুষ হয়েছেন যিনি যিহুদী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন ( যোহন ১: ১, ১৪)
✝পঞ্চমত: মশীহের প্রতিজ্ঞা: মসীহ শব্দের অর্থ অভিষিক্ত জন বা খ্রীষ্ট যিপি যিহূদীদের মধ্য থেকে আসবেন । (যিশাইয় ১২:৩,৩৫:৭,৪৪:৩,৫৫:১,সখরিয ১৪: ৮)।
খ্রীষ্ট বা মসীহ তিনটি দায়িত্ব : ভাববাদী, মহাযাজক ও রাজা যা পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন যা অন্য কারও পক্ষে সম্ভব না।
তাই যিহুদীদের উপরেই খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের পরিত্রাণ কারণ মসীহের মিসন শুধু যিহূদী নয় অযিহূদীদের বা সমস্ত জাতির মধ্যেই বর্তায় ।
সেই জন্য যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেছেন,
"আর সর্ব জাতির নিকটে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।"
[মথি ২৪:১৪]
"কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহূদিয়া ও শমরিয়া দেশে, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।"
[প্রেরিত ১:৮]
যিহূদীদের জন্য ঈশ্বরের পরিকল্পনা:
প্রকৃতপক্ষে জগতত্রাতা যাদের ঘরে জন্ম নিলেন তারা অনেকেই প্রভু যীশুকে গ্রহণ করে নাই । প্রেরিত যোহন এভাবে বলেছেন ,
"তিনি নিজ অধিকারে আসিলেন, আর যাহারা তাঁহার নিজের, তাহারা তাঁহাকে গ্রহণ করিল না।"
[যে।হন ১:১১]
তৎকালীন সময়ে যীশু যিহূদীদের ধর্মীয় দলদের উপরে তাদের অন্ধতার, অত্যাচার ও অমানবিকতার জন্য অনুযোগ করেছেন। তারাই যীশুকে রোমীয়দের হাতে যীশুকে ক্রুশে হত করার জন্য সমর্পণ করেন ।
যীশু তাদের পরিত্রাণের জন্য কেঁদেছেনও বটে ,
"পরে যখন তিনি নিকটে আসিলেন, তখন নগরটি দেখিয়া তাহার জন্য রোদন করিলেন,
কহিলেন, তুমি, তুমিই যদি আজিকার দিনে, যাহা যাহা শান্তিজনক, তাহা বুঝিতে! কিন্তু এখন সেই সকল তোমার দৃষ্টি হইতে গুপ্ত রহিল।"
(লূক ১৯:৪১- ৪২)
তদ্রূপ প্রেরিত পৌলও যিহূদীদের পরিত্রাণের চিন্তার কথা বলেছেন,
"আমি খ্রীষ্টেতে সত্য কহিতেছি, মিথ্যা কহিতেছি না, আমার বিবেকও পবিত্র আত্মাতে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিতেছে যে,আমার হৃদয়ে ভারী দুঃখ ও নিরন্তর যাতনা হইতেছে।"
(রোমীয় ৯:১-২)
(রোমীয় ৯:১-২)
কারণ কি ? যিহূদীর ঘরেই জন্ম গ্রহণ করলেই সে অব্রহামের কাছে প্রতিজ্ঞাত আশীর্বাদ পায় তা নয় । একজনকে অবশ্যই প্রভু যীশুকে তার মুক্তিদাতা হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে ।
উৎসাহের বাণী হচ্ছে এক সময় যিহূদীরা পরিত্রাণ পাবে খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তা পবিত্র শাস্র প্রমাণ করে,
(পাঠকদের রোমীয় ৯ থেকে ১১ অধ্যায় পড়ার জন্য অনুরোধ করছি)
(পাঠকদের রোমীয় ৯ থেকে ১১ অধ্যায় পড়ার জন্য অনুরোধ করছি)
কারণ, ভ্রাতৃগণ, তোমরা যেন নিজেদের জ্ঞানে বুদ্ধিমান না হও, এই জন্য আমি ইচ্ছা করি না যে, তোমরা এই নিগূঢ়তত্ত্ব অজ্ঞাত থাক যে, কতক পরিমাণে ইস্রায়েলের কঠিনতা ঘটিয়াছে, যে পর্যন্ত পরজাতীয়দের পূর্ণ সংখ্যা প্রবেশ না করে; 26 আর এই প্রকারে সমস্ত ইস্রায়েল পরিত্রাণ পাইবে; যেমন লিখিত আছে,
‘‘সিয়োন হইতে মুক্তিদাতা আসিবেন;
তিনি যাকোব হইতে ভক্তিহীনতা দূর করিবেন;"
(রোমীয় ১১:২৫,২৬)
✝✝✝যিহূদীদের সহ প্রত্যেককে অনুধাবন করতে হবে যে, যারা খ্রীষ্টের উপরে যারা বিশ্বাস করে তারা কখনও লজ্জিত হবে না,
"তাহারা সেই ব্যাঘাতজনক প্রস্তরে ব্যাঘাত পাইল; যেমন লেখা আছে, ‘‘দেখ, আমি সিয়োনে ব্যাঘাতজনক প্রস্তর ও বিঘ্নজনক পাষাণ স্থাপন করিতেছি; আর যে তাঁহার উপরে বিশ্বাস করে, সে লজ্জিত হইবে না।”
তাই আজকে আপনার বিশ্বাস কোথায় ?
প্রভু যীশুর উপরে না অন্য কিছুর উপর ?
প্রভু যীশুর উপরে না অন্য কিছুর উপর ?
উপসংহার: প্রকৃত পক্ষে প্রভু যীশু যিনি যিহুদী ও যিহুদী পরিবারে জন্ম গ্রহন করে ছিলেন যেন সমস্ত জাতিযেন অব্রাহামের কাছে প্রতিজ্ঞার মধ্যে দিয়ে খ্রীষ্টতে আশীর্বাদ পায় । আজকে যিহুদীরা খ্রীষ্টের সুসমাচারের অবিশ্বাসের কারনে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার বাহিরে অবস্থান করেছে । যিহুদী অযিহুদী বা পরজাতীয যে হোক না কেন প্রকৃত উপাসনা কারী হতে হলে পরিত্রাণ প্রাপ্ত হতে হবে । যা খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে কালভেরীর ক্রুশ দ্বারা সমপন্ন হয়েছে । তাঁকেই বিশ্বাস করতে হবে যেন জীবন্ত ঈশ্বরকে সত্যে ও আত্মায় আরাধনা করতে পারি ।। আমেন ।।
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
Comments
Post a Comment