মানুষের দেওয়া অভিশাপ অথবা সমালোচনা কিভাবে সামলাবেন ?
ভূমিকা : প্রায়ই মানুষের কাছ থেকে আমরা অভিশাপ পাই । অনেক সময় কারণে, অনেক সময় অকারণে ।
কিন্তু একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হিসেবে অভিশাপ অথবা সমালোচনা কিভাবে সামলাবেন ?
এ বিষয়ে রাজা দায়ূদ একটি চরম দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন ।
এ বিষয়ে রাজা দায়ূদ একটি চরম দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন ।
ঘটনা প্রবাহ : রাজা দাউদের রাজত্বের সময় তাঁর ছেলে অবশালেম রাজা দাউদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । যার ফলশ্রুতিতে যিরুশালেম রাজ বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ।
ভয়ের কারণে নয় বরং তা রক্ষার জন্য তিনি রাজধানী ছাড়েন।
তাই তিনি ও সহযোগীরা জৈতুন পর্বত পাড়ি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তারা বহুরীম নামক জায়গায় উপস্থিত হোন ।
সেই সময়ে রাজা শৌলের গোষ্ঠীর লোক শিমিয়ি নামে একজন দাউদ কে অভিশাপ দিতে শুরু করে ।
তিনি বলেন , " যা, যা, তুই রক্তপাতী, তুই পাষণ্ড। তুই যাহার পদে রাজত্ব করিয়াছিস, সেই শৌলের কুলের সমস্ত রক্তপাতের প্রতিফল সদাপ্রভু তোকে দিতেছেন, এবং সদাপ্রভু তোর পুত্র অবশালোমের হস্তে রাজ্য সমর্পণ করিয়াছেন; দেখ্, তুই নিজ দুষ্টতায় আট্কা পড়িয়াছিস, কেননা তুই রক্তপাতী।"
(২য় শমূ: ১৫: ৭-৮)
প্রকৃত পক্ষে যে দোষ রাজা দাউদ কে অভিশাপ দিতে ছিলেন তিনি সেই দোষে দোষী ছিলেন না । কারন রাজা শৌলকে হত্যা করার সুযোগ দাযূদের অনেক বার হয়েছিল । কিন্তু বারবার তিনি স্মরন করে ছিলেন শৌল ঈশ্বরের অভিষিক্ত লোক ।
দাযূদ কিভাবে সমালোচনা ও অভিশাপ সামলালেন :
প্রথমত : রাজা দাউদ ধরে নিয়ে ছিলেন ঈশ্বরই অভিশাপ দিতে ছিলেন । (২য় শমূয়েল ১৬ :১০ )। তিনি তাঁর সহকারী অবীশয়কে বলেন নিজের পুত্র যদি প্রাননাশের চেষ্টা করে তাহলে এ বিন্যামিনীয় অর্থাৎ শিমিয়ি কি না করবে । রাজা দাউদ মনে করে ছিল ঈশ্বরই অনুমতি দিচ্ছেন।
"উহাকে থাকিতে দেও; ও শাপ দিউক, কেননা সদাপ্রভু উহাকে অনুমতি দিয়াছেন।"
(১শমুযেল ১৬: ১১)
"উহাকে থাকিতে দেও; ও শাপ দিউক, কেননা সদাপ্রভু উহাকে অনুমতি দিয়াছেন।"
(১শমুযেল ১৬: ১১)
দ্বিতীয়ত : ঈশ্বরই অভিশাপকে আশীর্বাদে রূপান্তর করতে পারেন । রাজা দায়ূদ বলেছিলেন "অদ্য আমাকে দত্ত শাপের পরিবর্তে সদাপ্রভু আমার মঙ্গল করিবেন।"
তৃতীয়ত : রাজা দাউদ কখনো প্রতিশোধ নেওয়ার চিন্তা করেননি। যদিও তাঁর সাথে নিজস্ব বল ও সেনা বাহিনী ছিল । কমপক্ষে ছয়শ লোক তাঁর সাথে ছিল।
✝ প্রয়োগ :
খ্রীষ্টান হিসেবে আমারা যখন মিথ্যা ভাবে অভিশাপ বা সমালোচনার সম্মুখীনি হই । দাউদের মত তিনটি ব্যবহারিক নীতিমালা আমরা স্মরণ করতে পারি ।
প্রথমত : ঈশ্বরের অনুমতি ছাড়া কেউ কিছু করতে পারে না । অন্যায়ের প্রতিফলন দাতা ঈশ্বর । " "প্রতিশোধ লওয়া আমারই কর্ম, আমিই প্রতিফল দিব, ইহা প্রভু বলেন।” (রোমীয় ১২:১৯)
দ্বিতীয়ত : ঈশ্বর মানুষ প্রদও অভিশাপ আশির্বাদে রূপান্তর করতে পারেন । প্রকৃত পক্ষে আমারা সবাই ব্যবস্থা লংগনের কারনে অভিশপ্ত । " কিন্তু খ্রীষ্টই সমস্ত অভিশাপ থেকে মুক্তা করেন।
সাধু পৌল বলেন ,
সাধু পৌল বলেন ,
"খ্রীষ্টই মূল্য দিয়া আমাদিগকে ব্যবস্থার শাপ হইতে মুক্ত করিয়াছেন, কারণ তিনি আমাদের নিমিত্তে শাপস্বরূপ হইলেন; কেননা লেখা আছে, ‘‘যে ব্যক্তিকে গাছে টাঙ্গান যায়, সে শাপগ্রস্ত”
(গালা ৩: ১৩ পদ )
(গালা ৩: ১৩ পদ )
তৃতীয়ত : নিজেকে দমন রাখাই বুদ্ধি মানের কাজ । পরবর্তীতে শিমিই ভুল বুঝতে পেরে রাজা দাউদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ছিলেন । দাউদ ক্ষমা করেছেন কিন্তু তার পুত্র শলোমন এর বিচার করেছিলেন (১ম রাজা ২: ৮-৯ পদ)।
অন্য দিকে, কেউ যদি সত্যিকারে দোষী হয় তাহলে প্রভুর কাছে ক্ষমা চাইবে । যার বিরুদ্ধে দোষ করেছে তার কাছেও ক্ষমা চাইবে। প্রয়োজনে জরিমানা পরিশোধ করুক ( Retribution ) "কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।" (গালাঃ ৬:৭)
✝উপসংহারে বলা প্রয়োজন, সদাপ্রভু সহবর্তী থাকলে মানুষের অভিশাপে কোন যায় আসে না । শুধু আমাদের প্রয়োজন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা। ঈশ্বর তঁার কাজে সব সময়ই ধার্মিক ও ন্যায় পরায়ণ । তিনি দুষ্টতাকে দমন করার জন্য তিনিই যথেষ্ট ।।।
যীশু নিজেও সেই আদর্শ রেখে গেছেন ,
"তিনি নিন্দিত হইলে প্রতিনিন্দা করিতেন না; দুঃখভোগ কালে তর্জন করিতেন না, কিন্তু যিনি ন্যায় অনুসারে বিচার করেন, তাহার উপর ভার রাখিতেন।" (১ পিতর ২:২৩)। আমরা যেন সেই আদর্শ অনুসরণ করি ।। আমেন
।।
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.

Comments
Post a Comment