যিরুশালেমে প্রভু যীশুর বিজয় যাত্রার তাৎপর্য
ভুমিকা : প্রভু যীশুর জীবনের প্রতিটি ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তাঁর জন্ম, মৃত্যু, পুনরুত্থান, স্বর্গারোহন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । কিন্তু খ্রীষ্টের বিজয় যাত্রা যা ইতিহাসে Palm Sunday বা খেজুর পত্র বা তালপত্র রবিবার হিসাবে সুপরিচিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও বটে ।ঐতিহাসিক ভাবে প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের এক সপ্তাহ আগে এই তাৎপর্য ঘটনাটি তাঁর জীবনে ঘটে ।
খ্রীষ্ট তাঁর পরিচয্যার কাজ গালীল, যিহুদা, ও যর্দন নদীর পূর্ব পারের (Perea) এলাকাতে কাজ শেষ করে সবশেষ পরিত্রাণ কাজ করার জন্য যিরুশালেমের কাছে বৈথনিয়ায় আসেন । তখন ইস্রায়েল জাতির নিস্তার পর্ব ছয়দিন মাত্র বাকী (যোহন ১২: ১) । লক্ষ লক্ষ যিহুদী পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে যিরুশালেমে অবস্থান করতে ছিলেন নিস্তার পর্ব পালনের জন্য । আর সেই সময় প্রভু যীশু বিজেতা, জাগতিক জিঘাংসু বা সেনা শাসক হিসাবে নয় কিন্তু শান্তির রাজা হিসেবে যিরুশালেমে গাধায় চড়ে প্রবেশ করেন । আমরা এই ক্ষুদ্র আলোচনায় যীশুর এই বিজয় যাত্রার তাৎপর্য দেখব ।
যা লক্ষ্যণীয়:
---------------------------
চারটি সুসমাচারেই প্রভু যীশুর বিজয় যাত্রার ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে: মথি ২১: ১৯ , মার্ক ১১: ১- ১১, লূক ১৯: ২৯--৪০, যোহন ১১: ১--১৯ পদ।
---------------------------
চারটি সুসমাচারেই প্রভু যীশুর বিজয় যাত্রার ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে: মথি ২১: ১৯ , মার্ক ১১: ১- ১১, লূক ১৯: ২৯--৪০, যোহন ১১: ১--১৯ পদ।
ঘটনার ভবিষ্যত বাণী :
====================
সাধু মথি ও প্রেরিত
যে।হন উভয়েই বিজয় যাত্রা কে পুরাতন নিয়মের ভবিষ্যত বাণীর পূর্ণতা হিসেবে দেখিয়েছেন । মূলত সখরিয ভাববাদী খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে এ ঘটনার ভবিষ্যত বাণী করেন (সখরিয ৯: ৯) । সখরিয ভাববাদী ছিলেন বাবিলের বন্দিত্ব থেকে প্রত্যাগত দলের একজন। তিনি 536 খ্রীষ্টপূর্বে যিহুদীদের সাথে যিরুশালেমে আসেন । তিনি 523 খ্রীষ্ট পূর্ব এই ভবিষ্যত বাণী লিখেন (সখরিয় ১:১)। ভাববাদী সখরিয় প্রত্যাগমন যিহুদীদের জীবনে প্রভুর বাক্যে আলোকিত করতে চেয়েছেন । তিনি ৯ -- ১৪ অধ্যায়ের মসীহ বিষয়ক অনেক ভবিষ্যত বাণী করেন ।
====================
সাধু মথি ও প্রেরিত
যে।হন উভয়েই বিজয় যাত্রা কে পুরাতন নিয়মের ভবিষ্যত বাণীর পূর্ণতা হিসেবে দেখিয়েছেন । মূলত সখরিয ভাববাদী খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে এ ঘটনার ভবিষ্যত বাণী করেন (সখরিয ৯: ৯) । সখরিয ভাববাদী ছিলেন বাবিলের বন্দিত্ব থেকে প্রত্যাগত দলের একজন। তিনি 536 খ্রীষ্টপূর্বে যিহুদীদের সাথে যিরুশালেমে আসেন । তিনি 523 খ্রীষ্ট পূর্ব এই ভবিষ্যত বাণী লিখেন (সখরিয় ১:১)। ভাববাদী সখরিয় প্রত্যাগমন যিহুদীদের জীবনে প্রভুর বাক্যে আলোকিত করতে চেয়েছেন । তিনি ৯ -- ১৪ অধ্যায়ের মসীহ বিষয়ক অনেক ভবিষ্যত বাণী করেন ।
ঘটনার পটভূমি :
===================
===================
আমরা দেখেছি যে, চারটি সুসমাচারেই খ্রীষ্টের বিজয় যাত্রার ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে । আমাদের মনে রাখা উচিত যীশু লাসার ও তাঁর দুই বোন মার্থা ও মরিয়মের বাড়িতে ছিলেন । যীশু সেখান থেকেই যিরুশালেমের দিকে রওনা দেন ও যখন তাঁর শিষ্য জৈতুন পর্বতের পাশের এলাকায় বৈথনিয়ার নিকট বর্তী হলেন তখন দুজন শিষ্যকে পাশের গ্রাম থেকে গাধার শাবক আনতে বলেন ।
প্রভু যীশু এ সম্পর্কে বলেছেন,
প্রভু যীশু এ সম্পর্কে বলেছেন,
" --ঐ সম্মুখস্থ গ্রামে যাও; তথায় প্রবেশ করিবামাত্র একটি গর্দভশাবক বাঁধা দেখিতে পাইবে, যাহাতে কোন মানুষ কখনও বসে নাই; সেটি খুলিয়া আন।"
(লূক ১৯ : ৩0 পদ) ।
(লূক ১৯ : ৩0 পদ) ।
যিহুদীদের দৃষ্টিকোণ ছিল মসীহ হবেন মেলেটারী লিডার যিনি রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইস্রায়েল দেশ স্বাধীন করবে । আমরা যিহূদীদের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারি কারণ খ্রিস্টপূর্ব 63 অব্দে রে।মান শাসক পম্পে ( Pompey ) যিহুদীদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলেন । এর মধ্যে শত শত বছর আগে বাবিলনের বন্দিত্ব থেকে তারা যিরুশালেমে ফিরে আসেন তবুও তারা ভাববাদীদের কথিত ভাববাণী দ্বারা স্বর্ণ যুগ তারা দেখতে পায় নাই । তাই তারা মনে করে ছিলেন খ্রীষ্টই মুক্তি দিতে পারে কারন এর মধ্য খ্রীষ্ট প্রচুর পরিমাণ প্রমাণ দিয়েছিলেন তিনি রাজা ও মসীহ হওয়ার যোগ্যতা রাখে। তাই তারা খেজুর গাছের শাখা দিয়ে অভিবাদন জানিয়েছিলেন কারন তা ছিল বিজয়ের প্রতীক (প্রকাশিত ৭: ৯)।
তারা চিৎকার করে বলতেছিল,
"----, হোশান্না! ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন!
ধন্য যে রাজ্য আসিতেছে, আমাদের পিতা দায়ূদের রাজ্য; ঊর্ধ্বলোকে হোশান্না।" (মার্ক 11:9,10)
ধন্য যে রাজ্য আসিতেছে, আমাদের পিতা দায়ূদের রাজ্য; ঊর্ধ্বলোকে হোশান্না।" (মার্ক 11:9,10)
হে।শান্না শব্দের অর্থ?
হে।শান্না শব্দের অর্থ, " আমাদের পরিত্রাণ বা মুক্তি দাও " গীত 118: 25। জনতা রাজা দায়ূদের সাথে সম্পর্ক রেখে খ্রীষ্টের কাছে মুক্তির দাবীতে গীতটি গাইতে ছিলেন ।)
সময়:
যিহূদী মাস অনুযায়ী নিশান মাসের 10 তারিখ 30 খ্রিস্টাব্দ । দানিয়েল ভাববাদীর ভাববাণীর সময় থেকে 483 বৎসর পরের ঘটনা যা অহশ্বেরশের সময় বলেন। ( সূত্র: The Macarthur Study Bible : 1431)
" তোমার জাতির ও তোমার পবিত্র নগরের সম্বন্ধে সত্তর সপ্তাহ নিরূপিত হইয়াছে- অধর্ম সমাপ্ত করিবার জন্য, পাপ শেষ অভিষেক করিবার জন্য।"(দানিয়েল 9:24)
" তোমার জাতির ও তোমার পবিত্র নগরের সম্বন্ধে সত্তর সপ্তাহ নিরূপিত হইয়াছে- অধর্ম সমাপ্ত করিবার জন্য, পাপ শেষ অভিষেক করিবার জন্য।"(দানিয়েল 9:24)
যিহূদীদের বিচার :
যীশুর বিজয়যাত্রা যিহূদীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ নয় বরং অবিশ্বস্হ যিহুদীদের বিচার ও শাস্তি এনেছে কারণ তারা ঈশ্বরের মন্দিরকে ডাকাতদের গুহা বানিয়েছিল ( মার্ক 11:17)।
পরে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় 70 খ্রিস্টাব্দে
রে।মীয়দের দ্বারা যিরুশালেম মন্দির ধ্বংস হয় ।
পরে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় 70 খ্রিস্টাব্দে
রে।মীয়দের দ্বারা যিরুশালেম মন্দির ধ্বংস হয় ।
যীশুর বিজয় যাত্রার অর্থ :
(১) যীশু দুঃখ ভোগ করার জন্যই যিরুশালেমে এসেছেন যেন পাপীর জন্য ক্রূশে জীবন দিয়ে পরিত্রাণ সম্পন্ন করতে পারেন । সাধু পৌল ও জানতেন যিরুশালেমে গেলে তার ক্লেশ হবে তবুও বাধ্য হয়ে গেছেন ( প্রেরিত ২০ :২৩--২৪) পদ। ঈশ্বর গৌরবের জন্য যে দুঃখ ভোগ বা ক্রূশ সামনে রেখেছেন তা এড়িয়ে না গিয়ে যেন আমরা তা বহন করি।
(২) প্রভুর কাজে আপনাকে প্রয়োজন আছে। ঈশ্বর তাঁর মহা পরিকল্পনায় গাধাকে বহন করে ছিলেন । খ্রীষ্টের রাজ্যে আপনার অবস্থান যাই হোক না কেন আপনি ব্যবহারের উপযুক্ত কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত যীশুর যে গাধায় চড়ে ছিল ও তা কেউ কোন দিন ব্যবহার করেনি । সেই জন্য ঈশ্বর আমাদের পবিত্রতা আশা করেন ।
(৩) এই বিজয় যাত্রা খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের ঈশ্বরের প্রসংশা করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। যখন শিষ্যরা ঈশ্বরের প্রসংশা করতে ছিলেন তখন কয়েক জন ফরিশী তাদের চুপ থাকতে যীশুকে অনুরোধ করেছিলেন । কিন্তু উওরে যীশু বলেছিলেন ইহারা যদি চুপ করিয়া থাকে প্রস্তর সকল চেঁচাইয়া উঠিবে। এখানে যীশু পাথরকে পরজাতিয়কে পাথর বুঝিয়েছেন । ঈশ্বর যিহুদীদের সুযোগ দিয়েছিলেন যীশুকে তাদের মসীহ হিসাবে বিশ্বাস করার কিন্তু তারা তা করেনি । তাই ঈশ্বর পরজাতীয়দের দিয়ে খ্রীষ্ট কে প্রশংসা করায় আমাদের সুযোগ দিয়েছেন ।
(4). আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন প্রভু যীশু সবসময় আমাদের সব আশা পূরণ করেন না। যিহুদীরা আশা করেছিলেন সেই রকম একজন রাজা যিনি হবেন রাজা দায়ূদের মথ মিলিটারী লিডার যিনি রে।মের দাসত্বের যে।য়াল থেকে মুক্তি দিবে কিন্তু যীশু ছিলেন তাদের প্রত্যাশার বিপরীত । তিনি সখরিয়ের ভাববাণী অনুসারে গর্দভ শাবকে নম্রতায় শান্তি নিয়ে এলেন। তাছাড়া তাদের নিবেদন ছিল নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করা । সাধু যাকব আমাদের প্রার্থনা সম্পর্কে বলেছেন,
"যাচ্ঞা করিতেছ, তথাপি ফল পাইতেছ না; কারণ মন্দ ভাবে যাচ্ঞা করিতেছ, যেন আপন আপন সুখাভিলাষে ব্যয় করিতে পার।"(যাকব 4:3)। খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসীদের নিজের সুখ ভে।গের জন্য প্রার্থনা করা উচিত না।
"যাচ্ঞা করিতেছ, তথাপি ফল পাইতেছ না; কারণ মন্দ ভাবে যাচ্ঞা করিতেছ, যেন আপন আপন সুখাভিলাষে ব্যয় করিতে পার।"(যাকব 4:3)। খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসীদের নিজের সুখ ভে।গের জন্য প্রার্থনা করা উচিত না।
(5) খ্রীষ্টকে রাজা হিসেবে হৃদয়ে স্হান দেওয়া। তিনিই রাজাদের রাজা , প্রভুদের প্রভু । তাঁর রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাঁর ভালবাসা , অনুগ্রহ , করুণায় ও তাঁর ক্রুশীয় বলিদানের মধ্য দিয়ে জাগতিক প্রভাব ও শক্তি দ্বারা নয়।
যেহেতু তাঁর রাজ্য এ জগতে নয় তাই স্বর্গ রাজ্যের নাগরিক হিসেবে সেই জীবন করা উচিত যেমনটি সাধু পৌল বলেছেন," কারণ ঈশ্বরের রাজ্য ভোজন-পান নয়, কিন্তু ধার্মিকতা, শান্তি এবং পবিত্র আত্মাতে আনন্দ।"
(রে।মীয় 14: 17)।
(রে।মীয় 14: 17)।
(6) প্রভু যীশুর আগমন ছিল মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা পাপ এবং পাপের দাসত্ব দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া । খ্রীষ্ট ক্রুশে যে মুক্তির কাজ সম্পন্ন করেছেন, যে বিজয় এনে দিয়েছেন তাঁর জন্য কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা স্মরণ করা। প্রকৃত অর্থে তিনিই আমাদের মুক্তিদাতা ও রাজা , তাই তিনি আমাদের প্রশংসা ও আরাধনা পাওয়ায়
যোগ্য ।।
(7) প্রভুর কাজ কখনও ব্যবসা হিসাবে গ্রহণ করা উচিত নয়। প্রভু যীশু মন্দির ব্যবসা কেন্দ্র পরিণত হওয়াকে ধিক্কার দিয়েছিলেন এবং পরিষ্কার করেছিলেন কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী থাকেনি যার কারনে মন্দির ধ্বংস হয়েছিল । আজকে যারা প্রভুর সাথে যুক্ত আছে তাদের সাবধান হওয়া দরকার ।
যোগ্য ।।
(7) প্রভুর কাজ কখনও ব্যবসা হিসাবে গ্রহণ করা উচিত নয়। প্রভু যীশু মন্দির ব্যবসা কেন্দ্র পরিণত হওয়াকে ধিক্কার দিয়েছিলেন এবং পরিষ্কার করেছিলেন কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী থাকেনি যার কারনে মন্দির ধ্বংস হয়েছিল । আজকে যারা প্রভুর সাথে যুক্ত আছে তাদের সাবধান হওয়া দরকার ।
উপসংহার: খ্রীষ্টের যিরুশালেমে গর্দভ শাবকে প্রবেশ খ্রীষ্টের জীবনে অত্যন্ত মহিমান্বিত অধ্যায় যা তাঁর রাজা হিসাবে বিজয় যাত্রা প্রকাশ করে । অনেকেই সেদিন হে।শান্না রবে আকাশ বাতাশ পরিপূর্ণ করেছিলেন কিন্তু তাদের মধ্য থেকে অনেকেই যীশুকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও বলে চিৎকার করেছিলেন ।কিন্তু আমরা তাদের মত হতে পারি না বরং খ্রীষ্টকে রাজা হিসেবে মেনে নিয়ে তাঁকেই হৃদয় মন্দিরে ঠাঁই দেই আর তাতেই খ্রীষ্টের বিজয় যাত্রার অধ্যায় আমাদের জীবনে মহিমান্বিত হবে।
প্রভু আমাদের ঐতিহাসিক এই ঘটনার মর্মার্থ বুঝতে সাহায্য করুণ ।।
প্রভু আমাদের ঐতিহাসিক এই ঘটনার মর্মার্থ বুঝতে সাহায্য করুণ ।।
আমেন ।।
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
Comments
Post a Comment