পঞ্চাশত্তমীর( Penticost)পর্বের তাৎপর্য

ভূমিকা : খ্রীষ্ট ধর্মের সমস্ত কিছুতেই স্বর্গীয় আশ্চর্য ঘটনা, অলৌকিক ও অদ্ভুত চিহ্ন কার্যের সমারোহের দ্বারা স্হাপিত। যেমন : খ্রীষ্টের পবিত্র আত্মার প্রভাবে আশ্চর্য জন্ম, তাঁর দ্বারা আশ্চর্য ও চিহ্ন কাজ , তাঁর মৃত্যুর উপরে জয় , তাঁর আশ্চর্য স্বর্গারোহণ ও যিহুদী উৎসব পঞ্চাশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মার অবতরণের মধ্য দিয়ে পবিত্র নতুন নিয়মের মন্ডলীর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু, যা হবে আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় ।
👉 শাব্দিক অর্থ ও ইতিহাস আলোচনা :
"পঞ্চাশত্তমী" বা "penticost" শব্দটি গ্রীক শব্দ "penticostos" থেকে যার অর্থ "পঞ্চাশ" যা নিস্তার পর্বের পরের পঞ্চাশতম দিনকে বুঝায় ।( Evangelical Dictionary , page -898) আমাদের মনে রাখা উচিত, এই পর্ব পুরাতন নিয়মের সাত সপ্তাহের পর্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত । ভাববাদী মোশির মধ্য দিয়ে ঈশ্বর এইভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন,
"তুমি সাত সপ্তাহের উৎসব, অর্থাৎ কাটা গমের আশুপক্ক ফলের উৎসব, এবং বৎসরের শেষভাগে ফলসংগ্রহের উৎসব পালন করিবে।"
(যাত্রা পুস্তক ৩৪:২২)
ঈশ্বর আরও নির্দিষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন,
"আর সেই বিশ্রামবারের পরদিন হইতে, দোলনীয় নৈবেদ্যরূপ আটি আনিবার দিন হইতে, তোমরা পূর্ণ সাত বিশ্রামবার গণনা করিবে।এইরূপে সপ্তম বিশ্রামবারের পরদিন পর্যন্ত তোমরা পঞ্চাশ দিবস গণনা করিয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে নূতন ভক্ষ্যের উপহার নিবেদন করিবে।" অর্থাৎ নতুন শস্য সংগ্রহের উৎসব।
(লেবীয় ২৩:১৫-১৬ তুলনীয় দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:৯,১০)
👉"নতুন নিয়ম পরিক্রমা" পুস্তকে মেরিল সি টেনি আমাদের এ সম্পর্কে জানায় ,
" পঞ্চাশত্তমী বা আশুপক্ক ফলের উৎসব হতো
সিব মাসে। নিস্তার পর্বের পরবর্তী সময়ে
দোলনীয় আটির নৈবেদ্যের সাত সপ্তাহ পরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হতো। এই দুই উৎসবের মধ্যে পঞ্চাশ দিনের বিরতী থাকায় এর নামকরণ হয়েছে পঞ্চাশত্তমী। যিহুদী ঐতিহ্য অনুযায়ী সীনয় পর্বতে ব্যবস্থা প্রদানের দিনকে উপলক্ষ্য করে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হতো।"
🌋( মেরিল সি টেনী,নতুন নিয়ম পরিক্রমা -১১৫ পাতা )
আমাদের আরও জানা প্রয়োজন যে , ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে তিনটি প্রধান পর্ব পালনের কথা বলেছেন:
ক)নিস্তার পর্ব,
খ)সাত সপ্তাহের পর্ব বা পঞ্চাশত্তমীর পর্ব ও
গ)কুটিরের উৎসব পালন ( দ্বিতীয় বিবরণ ১৬ অধ্যায়)।
এ পর্বগুলো পালন করার জন্য যিহূদীদের তিন বার যিরূশালেমে যেতে হত । প্রভু যীশু নিজেও একজন যিহূদী হিসেবে এই পর্ব গুলো পালন করার জন্যে যিরূশালেমে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা এই শব্দ( Penticost) নিজেরা আবিষ্কার করে নাই বরং গ্রীক ভাষাবাদীদের কাছ থেকে ধার করেছে যারা যিহূদী ছুটির ক্ষেত্রে ব্যবহার করত- যা সাত সপ্তাহের পর্ব । হিব্রু ভাষায় বলে শাভুওট বা Shavuot- যা যিহুদীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্ব উৎসব যখন তারা ছুটি ভোগ করত।
♨️♨️♨️পবিত্র আত্মার আগমনের ভাববাণী : খ্রীষ্ট পূর্ব নবম শতাব্দীর ভাববাদী পবিত্র আত্মার অবতরণের কথা ভাববাদী যোয়েল ভাববাণী করেন।
(যোয়েল ২:২৮-৩)
নতুন নিয়মে প্রভু যীশু পবিত্র আত্মার আগমন ও তাঁর কাজ সম্পর্কে যোহন সুসমাচারে বিস্তারিত আলোচনা করা করেছেন (যোহন ১৪ থেকে ১৬ অধ্যায়)। তাছাড়াও লূক ২২: ৪৯ প্রেরিত ১:৮ প্রভু যীশু পবিত্র আত্মার জন্য শিষ্যদের অপেক্ষা করতে বলেছেন ।
পঞ্চশত্তমীর সাথে পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়মের সম্পর্ক :
নিস্তার পর্বের সময় প্রভু যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থান সমপন্ন হয়। অর্থাৎ পিতা ঈশ্বর প্রভু যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়াল পাপ থেকে নিস্তারের ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে আমরা দেখতে পাই, নিস্তার পর্বের সাত সপ্তাহের পরদিন যেমন নতুন ফসলের অনুষ্ঠান করত তেমনি পিতা ও পুত্র যীশু , পবিত্র আত্মাকে প্রেরণের মধ্য দিয়ে নতুন নিয়মের মন্ডলী আরম্ভ পূর্বক নতুন ফসল দিয়েছেন । আমরা দেখতে পাই, ৩০০০ নতুন বিশ্বাসী খ্রীষ্টের মন্ডলীর সাথে যুক্ত হয়েছে ।
♨️পঞ্চশত্তমীর দিনে আসলে কি ঘটেছিল ?
প্রেরিত ২ অধ্যায় ডা: লূক তা লিপিবদ্ধ করেছেন।
"পরে পঞ্চাশত্তমীর দিন উপস্থিত হইলে তাঁহারা সকলে এক স্থানে সমবেত ছিলেন।
আর হঠাৎ আকাশ হইতে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দবৎ একটা শব্দ আসিল, এবং যে গৃহে তাঁহারা বসিয়াছিলেন, সেই গৃহের সর্বত্র ব্যাপ্ত হইল।আর অংশ অংশ হইয়া পড়িতেছে, এমন অনেক অগ্নিবৎ ♨️জিহ্বা তাঁহাদের দৃষ্টিগোচর হইল; এবং তাঁহাদের প্রত্যেক জনের উপরে বসিল।তাহাতে তাঁহারা সকলে পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন, এবং আত্মা তাঁহাদিগকে যেরূপ বক্তৃতা দান করিলেন, তদনুসারে অন্য অন্য ভাষায় কথা কহিতে লাগিলেন।"

(প্রেরিত ২:১-৪)
আমাদের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন , শিষ্যরা যেসব ভাষা বলতে ছিল তা ছিল জগতের কোন না কোন ভাষা এবং অবশ্যই বোধগম্য । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হাজার হাজার যিহুদীরা যারা যিরূশালেমে এই পর্ব পালন করার জন্যে এসেছিলেন তারা তাদের নিজের ভাষা শুনতে ও বুঝতে পেয়েছেন।এ আশ্চর্য বাণীর মধ্যে ঈশ্বরের মহৎ ও আশ্চর্য কাজের বর্ণনা ছিল । যিহূদীরা বলতে ছিল ,
"আমাদের নিজ নিজ ভাষায় উহাদিগকে ঈশ্বরের মহৎ মহৎ কর্মের কথা বলিতে শুনিতেছি।" (প্রেরিত ২:১১)
তাদের এমন কাজ করার জন্য অনেকে আশ্চর্য হয়েছিল আবার অনেকে তাদের মাতাল হিসাবে মনে করেছিল।
"এইরূপে তাহারা সকলে চমৎকৃত হইল ও হতবুদ্ধি হইয়া পরস্পর বলিতে লাগিল, ইহার ভাব কি?অন্য লোকেরা পরিহাস করিয়া বলিল, উহারা মিষ্ট দ্রাক্ষারসে মত্ত হইয়াছে।"
[প্রেরিত ২:১২,১৩]
এই সময় যীশুর একজন প্রধান শিষ্য পিতর দাঁড়িয়ে তাঁর প্রথম উপদেশ দিলেন। তিনি এই ঘটনা ভাববাদী যোয়েলের ভাববাণীর আলোকে ব্যাখ্যা করেন। যোয়েল ভাববাদী বলেছিলেন ঈশ্বর পবিত্র আত্মাকে পৃথিবীতে সমস্ত মর্ত্যের উপর সেচন করবেন, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে স্বর্গীয় শক্তি দ্বারা শক্তিশালী করবেন। যা হবে আগত "প্রভুর দিন" এর চিহ্ন ।
[প্ররিত ২:১৬-২১, তুলনীয় যোয়েল ২:২৮-৩২]
প্রেরিত পিতর পরে বলেন ,
👉"অতএব তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্ত দ্বারা উচ্চীকৃত হওয়াতে, এবং পিতার নিকট হইতে অঙ্গীকৃত পবিত্র আত্মা প্রাপ্ত হওয়াতে, এই যাহা তোমরা দেখিতেছ ও শুনিতেছ, তাহা তিনি সেচন করিলেন।" [প্রেরিত ২:৩২,৩৩]
প্রেরিত পিতরের বক্তব্য শেষ করার পর আগত যিহূদীরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাদের কি করা উচিত? 
উত্তরে শিষ্য পিতর বলেছিলেন,
👉"তখন পিতর তাহাদিগকে কহিলেন, মন ফিরাও, এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের পাপমোচনের নিমিত্ত যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও; তাহা হইলে পবিত্র আত্মারূপ দান প্রাপ্ত হইবে।"[প্রেরিত ২:৩৮]
প্রেরিত পুস্তক আমাদের জানায় সেইদিন প্রায় ৩০০০ লোক মন্ডলীর সাথে যুক্ত হয়। যা ঈশ্বর প্রদত্ত মন্ডলীর জন্য প্রথম ফসল ।
পঞ্চশত্তমীর সাথে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সম্পর্ক :
পঞ্চশত্তমীর পর্বের দিনে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা অর্থাৎ খ্রীষ্টের শিষ্যরা ঈশ্বরের উপস্থিতিতে শক্তিশালী অভিজ্ঞতা অর্জন করে বিশেষ করে পরভাষা বলার মধ্য দিয়ে ( শিষ্যদের কাছে অজানা ভাষা ছিলো).
অনেক কারণে পঞ্চশত্তমী খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । Mark D Roberts চারটি কারণের কথা বলেছেন ,
প্রথমত : পবিত্র আত্মার কাজ প্রভু যীশুর দ্বিতীয় আগমন পর্যন্ত বিশ্বাসীদের জীবনে চলবে : খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের সাত সপ্তাহ পরে
পবিত্র আত্মার অবতরণ হয়েছে নতুন নিয়মের মন্ডলী প্রতিষ্ঠিত করার জন্য । পবিত্র আত্মার কাজ আজও খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জীবনে চলছে। পবিত্র আত্মা প্রথমে যেভাবে নাটকীয়ভাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন( যেমন : প্রচন্ড বায়ু, শব্দ ও আগুনের উপস্থিতি) সেভাবে হয়ত তাঁর কাজ আমরা দেখতে নাও পারি তবুও তাঁর চলছে: নতুন জন্ম দানে, আত্মার অভিষেকে, আত্মার মুদ্রাংকে, আত্মা দ্বারা পবিত্র করণে , আত্মার দানসহ নানাবিধ আশীর্বাদের কাজ বিশ্বাসীদের জীবনে সম্পন্ন করছেন । তাছাড়া, ঈশ্বর পবিত্র আত্মাকে সেচন করেন যারা প্রভু যীশুর উপরে তাদের বিশ্বাস রাখেন যেন তাঁর শিষ্য হতে পারে(রোমীয় ৮:১-১১)
পবিত্র আত্মা আরও সাহায্য করছেন :
👉যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার করতে সাহায্য করছেন (১ করি:১২:৩)
👉বিশ্বাসীদের ঈশ্বরের বিভিন্ন দানের মধ্য দিয়ে সেবা করতে সাহায্য করেন (১ করি:১২:৪-১১)
👉 খ্রীষ্টের দেহের সাথে সংযুক্ত রাখছেন (১ করি:১২-১৩)
👉বিশ্বাসীদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করেন (রোমীয় ৮:২৬)
👉 আমাদের জন্য পিতা ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করেন (রোমীয় ৮:২৭)
👉 নির্দেশনা দান করেন (গালাতীয় ৫:২৫)
👉যীশুর মত হতে সাহায্য করে (গালাতীয় ৫:২২-২৩)
ব্যক্তিগত প্রয়োগ :
পঞ্চশত্তমী আমাদের প্রতিটি দিনে সুযোগ করে দেন যেন তাঁর আবেশে যেন চলতে পারি। আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত , "আমরা কি পবিত্র আত্মার শক্তিতে চলছি কি না ? আমরা পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করছি কি না ?
তাঁর নির্দেশনায় সাড়া দিচ্ছি কি না ?
পবিত্র আত্মার ফল (ভালবাসা, আনন্দ, শান্তি ইত্যাদি) আমাদের জীবনে উৎপন্ন হচ্ছে কি না ?
পঞ্চশত্তমী খ্রীষ্টভক্তদের ব্যর্থতার পাপ স্বীকার করে পবিত্র আত্মার আবেশে ফলপ্রসু জীবন যাপনের জন্য প্রভুর সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করা উচিত ।
👉👉👉দ্বিতীয়তঃ বিশ্বে মন্ডলীর কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনে পবিত্র আত্মার ভূমিকা :
এই সময় অর্থাৎ পঞ্চশত্তমীর সময় যিরূশালেমে যখন একত্র হয়ে প্রার্থনা করছিলেন তখন পবিত্র আত্মা প্রত্যেক শিষ্যদের উপরে অবতরণ করেন । তাদের সমবেত ব্যক্তিরাই নতুন নিয়মের মন্ডলীর সূত্রপাত হয় । যীশুতে বিশ্বাসী নতুন বিশ্বাসীগণ বাপ্তিম্ম গ্রহণ করে মন্ডলীতে সংযুক্ত হয় । তারা একসাথে সমস্ত কিছুই সহভাগিতা করত।, একই সাথে প্রার্থনা,শিক্ষায় ও রুটি ভাংগায় সময় ব্যয় করত ।
ব্যক্তিগত প্রয়োগ : ঈশ্বরের সাথে সহভাগিতার পাশাপাশি বিশ্বাসীদের সাথে সহভাগিতা প্রয়োজন। আত্মকেন্দ্রিক জীবন খ্রীষ্টীয় জীবন না।
👉তৃতীয়তঃ বিভিন্ন ভাষার প্রকৃতি ও মন্ডলীর বিশ্ব প্রচার কাজ :
পঞ্চাশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মা খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসীদের এমনভাবে শক্তিশালী করেছিলেন যে তারা যে ভাষা শিক্ষা করেনি সেই ভাষায় ঈশ্বরের প্রশংসা করেছিলেন (প্রেরিত ২:৫-১৩)। সাংকেতিকভাবে, এই আশ্চর্য কাজ বিভিন্ন ভাষা, বহু সংস্কৃতি ও বহু জাতির মাঝে কাজ করতে বাধ্য করে। পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে ঈশ্বরের ভালবাসায় একটি খ্রীষ্টীয় সমাজ গঠনে আমাদের সাহায্য করে।
ঈশ্বর একসময় ভাষাভেদ করেছিলেন মানুষের পাপের কারণে কিন্তু পঞ্চশত্তমী পর্ব সেই অভিশাপ ভেঙে ঈশ্বর আশীর্বাদ নিয়ে এসেছেন (আদি ১০)
প্রেরিত পৌল এ সম্পর্কে বলেছেন,
"যিহূদী কি গ্রীক আর হইতে পারে না, দাস কি স্বাধীন আর হইতে পারে না, নর ও নারী আর হইতে পারে না, কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা সকলেই এক।"[গালাতীয় ৩:২৮]
প্রয়োগ : আমাদের খ্রীষ্টভক্ত ভাই বোনদের ভা আ, জাতি, উপজাতি, সংস্কৃতি বিভক্ত হওয়া ঠিক নয়।
👉চতুর্থতঃ মন্ডলীর পবিত্র কাজ
পবিত্র আত্মা অবতরণের পরে প্রেরিত পিতর একটি উপদেশ বাণীতে কি ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করার পরে বলেছিলেন যারা মনপরিবর্তন করবে তাদেরকে পবিত্র আত্মা দেওয়া হবে ,
"তখন পিতর তাহাদিগকে কহিলেন, মন ফিরাও, এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের পাপমোচনের নিমিত্ত যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও; তাহা হইলে পবিত্র আত্মারূপ দান প্রাপ্ত হইবে।" [প্রেরিত ২:৩৮]
সেদিন ছিল সত্যিই স্মরণীয় দিন যেদিন ঈশ্বর ইতিহাসে প্রথমবারের মত ভাববাদী যোয়েল দ্বারা কথিত বিভিন্ন ধরণের সাধারণ মানুষকে শক্তিশালী করেছেন । পুরাতন নিয়মে এই কাজগুলো ছিল সীমাবদ্ধ: শুধু ভাববাদী, যাজক ও রাজাদের মধ্যে । কিন্তু এখন সমস্ত মানুষের কাছে তা সম্ভব হয়েছে। এখন প্রতিটি বিশ্বাসীদের কোন না কোন আত্মার দান দেওয়া হয় যাতে মন্ডলী শক্তিশালী ও গঠিত হয় (ইফিষীয় ৪:১১-১৬)
ব্যক্তিগত প্রয়োগ: প্রতিটি বিশ্বাসীদের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত তারা কি পবিত্র আত্মার দান সঠিক ও বিশ্বস্তভাবে ব্যবহার করছেন কিনা ।
যারা মন্ডলীতে বিভিন্ন পদে রয়েছেন তাদেরও প্রশ্ন করা তাদের খ্রীষ্টের মনোভাব আছে কি না?
প্রেরিত পৌল বলেছেন,
"তোমরা আপনাদের বিষয়ে সাবধান, এবং পবিত্র আত্মা তোমাদিগকে অধ্যক্ষ করিয়া যাহার মধ্যে নিযুক্ত করিয়াছেন, সেই সমস্ত পালের বিষয়ে সাবধান হও, ঈশ্বরের সেই মণ্ডলীকে পালন কর, যাহাকে তিনি নিজ রক্ত দ্বারা ক্রয় করিয়াছেন।"
(প্রেরিত ২০:২৮)
পবিত্র আত্মা কিভাবে গ্রহণ করব ?
যীশু তাঁর উত্তর দিয়েছেন :
বিশ্বাসযুক্ত প্রার্থনা :
👉"অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে পবিত্র আত্মা দান করিবেন। (লূক ১১:১৩)
এই আশীর্বাদ যাচ্ঞা করার জন্য প্রকৃত বিশ্বাস, অনুতাপ ও মনপরিবর্তন দরকার (প্রেরিত ২:৩৮)
👉উপসংহার: পঞ্চাশত্তমী এখন শুধু একটি উৎসবের নাম নয় এটি একটি স্মরণীয় দিন। যেদিনে তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তিনি তাঁর আত্মাকে পৃথিবীর বুকে সেচন করেছেন যেন নতুন নিয়ম মন্ডলীর কার্যক্রম মহাসমারোহে শুরু হতে পারে। তাই এই কাজ সত্যায়নের জন্য তিনি জাগতিক শক্তি নয় কিন্তু স্বর্গীয় শক্তির মহিমায়, আশ্চর্য কাজ ও চিহ্নে সাধন করেছেন যেন বিশ্ববাসী বিশ্বাস করে যেন খ্রীষ্টকৃত পথে আশ্রয় ও আশীর্বাদ পায়। আপনিও সেই ঐতিহাসিক ঘটনা জেনে কি চুপ করে থাকবেন নাকি সেই পরম সত্যকে বিশ্বাস করে ধন্য ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবেন ?
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
The-significance-of-the-episode-of-Pentecost

Comments

Popular posts from this blog

একজন ভাল মা অথবা বাবা হওয়া সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?

কিভাবে আমি নিশ্চিত জানতে পারি, মরে গেলে পর আমি স্বর্গে যাব?

প্রশ্ন: মৃত্যুর পর আপনি কোথায় যাবেন?

আমি কিভাবে ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি?

করোনা ভাইরাসের জন্য শারীরিক ও আত্মিক প্রস্তুতি

প্রশ্ন: যীশু খ্রীষ্ট কে?

পর্ণোছবি (অশ্লীল ছবি) সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে? পর্ণোছবি দেখা কী পাপ?

প্রশ্ন: বাইবেল কি সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য?

মৃত্যুর পরে কি কোন জীবন আছে?

খ্রীষ্টীয় পরিত্রাণের উদ্দেশ্য: প্রভু যীশুর প্রতিমূর্তির মত হওয়া

Popular Posts

একজন ভাল মা অথবা বাবা হওয়া সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?

কিভাবে আমি নিশ্চিত জানতে পারি, মরে গেলে পর আমি স্বর্গে যাব?

প্রশ্ন: মৃত্যুর পর আপনি কোথায় যাবেন?

আমি কিভাবে ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি?

করোনা ভাইরাসের জন্য শারীরিক ও আত্মিক প্রস্তুতি

প্রশ্ন: যীশু খ্রীষ্ট কে?

পর্ণোছবি (অশ্লীল ছবি) সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে? পর্ণোছবি দেখা কী পাপ?

প্রশ্ন: বাইবেল কি সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য?

মৃত্যুর পরে কি কোন জীবন আছে?

খ্রীষ্টীয় পরিত্রাণের উদ্দেশ্য: প্রভু যীশুর প্রতিমূর্তির মত হওয়া