নোহ কিভাবে ঈশ্বরের অনুগ্রহ পেয়েছিল? আপনি কি সেই অনুগ্রহ পেতে চান?
উত্তরঃ প্রিয়পাঠক,আসুন আমরা আমাদের বাইবেল খুলি ও পড়ি -
আদিপুস্তক ৭:১,‘‘আর সদাপ্রভু নোহকে কহিলেন, তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কেননা এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি।"
নোহ রক্ষা পেয়েছিলেন সেই কারণে নয় যে তিনি ভালমানুষ ছিলেন| তাকে রক্ষা করা হয়েছিল কারণ ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘‘আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি’’ (আদিপুস্তক ৭:১)। ঈশ্বর তাকে ধার্ম্মিক হিসাবে দেখেছিলেন। কেন? উত্তরটি সহজ। উত্তরটি আদিপুস্তকের, ষষ্ঠ অধ্যায়ের, আট নম্বর পদে বলা হয়েছে। অনুগ্রহ করে আপনার বাইবেলের সেই পাতাটি খুলুন।
‘‘কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন’’ (আদিপুস্তক ৬:৮)।
ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নোহ অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়েছিলেন। আর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘‘আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি’’ (আদিপুস্তক ৭:১)। এটা আরোপিত ধার্ম্মিকতার কথা বলছে। ইব্রীয় ১১:৭ পদটি আমাদের স্পষ্ট বলছে যে নোহ বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ পেয়েছিলেন:
‘‘বিশ্বাসে নোহ...আপন পরিবারের ত্রাণার্থে এক জাহাজ নির্ম্মাণ করিলেন’’ (ইব্রীয় ১১:৭)।
আমি অবশ্যই আবার বলছি, নোহ রক্ষা পেয়েছিলেন সেই কারণে নয় যে তিনি ভাল মানুষ ছিলেন, যদিও তিনি ছিলেন বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একজন ভালো মানুষ। কিন্তু তিনি একজন নিখুঁত মানুষ ছিলেন না, যেমন বাইবেল আমাদের সরল ভাবে বলে দিয়েছে, মহাপ্লাবনের পরে তিনি দ্রাক্ষারস পান করে মত্ত হয়েছিলেন (দেখুন, আদিপুস্তক ৯:২০-২১)। আমরা নোহকে ক্ষমা করতে পারি। তিনি ভয়ঙ্কর এক ভাগ্যপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চলছিলেন এবং সম্ভবত তিনি মহাপ্লাবনের বিষয়ে তার কম্পমান ভীতি এবং রাত্রিকালীন বিভীষিকা, দ্রাক্ষারস পানের মধ্যে ডুবে থেকে ভুলতে চেয়েছিলেন। অথবা সম্ভবত এটা শুধুমাত্র একটা ভুল ছিল, আর তিনি জানতেন না যে তার উপরে দ্রাক্ষারস কি প্রভাব বিস্তার করবে যেহেতু মহাপ্লাবনের সময়ে পৃথিবীর চারিদিকে জলের ঘেরাটোপ নেমে আসার আগে সেখানে সেই ধরনের কোন মানসিক উত্তেজনা ছিল না। এই দুইয়ের যে কোন ক্ষেত্রেই, বাইবেল নোহকে বিশুদ্ধচরিত্রের মানুষ হিসাবে চিত্রিত করেনি। কিন্তু তিনি ছিলেন, যেমন পিউরিটানরা বলে থাকেন, ‘‘যদিও পাপ করিয়াছেন তবুও সততা প্রতিপাদন করিয়াছেন। ’’ তিনি নিখুঁত ছিলেন না, কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তিনি পূর্ব-দেহধারী খ্রীষ্টের উপরে ন্যস্ত বিশ্বাসের মাধ্যমে ন্যায্য প্রতিপাদিত হয়েছিলেন। খ্রীষ্টের উপরে নোহের বিশ্বাস ছিল, ঈশ্বরে অনুগ্রহের দ্বারা যা তাকে দেওয়া হয়েছিল (দেখুন, আদিপুস্তক ৬:৮)। যখন নোহ খ্রীষ্টের উপরে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, ঈশ্বর তার নথিতে, খ্রীষ্টের ধার্ম্মিকতা আরোপ করেছিলেন, অথবা গণিত করেছিলেন| বাইবেলের নতুন নিয়মে এই বিষয়ের উপরে বেশ চমৎকার কিছু বলা হয়েছে| রোমীয়, অধ্যায় চার, পাঁচ ও ছয় নম্বর পদ দুটি দেখুন।
‘‘কিন্তু যে ব্যক্তি কার্য্য করে না - তাঁহারই উপরে বিশ্বাস করে, যিনি ভক্তিহীনকে ধার্ম্মিক গণনা করেন - তাঁহার বিশ্বাসই ধার্ম্মিকতা বলিয়া গণিত হয়| এই প্রকারে দায়ূদও সেই ব্যক্তিকে ধন্য বলিয়া উল্লেখ করেন, যাহার পক্ষে ঈশ্বর কার্য্য ব্যতিরেকে ধার্ম্মিকতা গণনা করেন’’ (রোমীয় ৪:৫-৬)।
যখন ঈশ্বর নোহকে বলেছিলেন, ‘‘আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি (আদিপুস্তক ৭:১)। তিনি বলছিলেন যে তিনি নোহের পাপগুলি দেখতে পাচ্ছেন না, কারণ বিশ্বাসের দ্বারা খ্রীষ্টের ধার্ম্মিকতা নোহের নথিতে স্থাপন করা হয়েছিল। সেটাই হচ্ছে পুন্:জাগরণের নীতিবাক্য - ‘‘শোলে ফিডা’’ - কেবলমাত্র খ্রীষ্টে বিশ্বাস করার দ্বারা পরিত্রাণ! ভাল মানুষ হওয়ার জন্যে নোহকে রক্ষা করা হয়নি। পূর্ব-আবির্ভূত খ্রীষ্টের উপরে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে পরিত্রাণ পেয়েছিলেন!
এখন জাহাজটির কথা বিবেচনা করুন। সেই জাহাজটি একটি নৌকা ছিল না। সেটা সমুদ্রযাত্রা করার উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়নি। এটা ছিল সাধারণভাবে লম্বা একটা কাঠের বাক্স যার প্রান্তভাগ দুটি ক্রমশ সরু হয়ে গেছিল। এটার আগাপাশতলা কালো পিচ দ্বারা আবৃত ছিল। জাহাজের বিষয়ে আমরা এই মন্তব্য করতে পারি।
এখন জাহাজটির কথা বিবেচনা করুন। সেই জাহাজটি একটি নৌকা ছিল না। সেটা সমুদ্রযাত্রা করার উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়নি। এটা ছিল সাধারণভাবে লম্বা একটা কাঠের বাক্স যার প্রান্তভাগ দুটি ক্রমশ সরু হয়ে গেছিল। এটার আগাপাশতলা কালো পিচ দ্বারা আবৃত ছিল। জাহাজের বিষয়ে আমরা এই মন্তব্য করতে পারি।
জাহাজটির সম্বন্ধে বেশির ভাগ লোকের সেই ধারণাই ছিল যাহা তাহাদের সম্মুখে ক্ষুদ্র সানডে স্কুল দ্বারা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হইয়াছিল যাহাতে বলা হইয়াছিল যে ইহা দেখিতে একটি হাউসবোটের ন্যায় ছিল। আমার নিকটে, ইহা একটি অতি হাস্যকর ধরনের তথ্যবিকৃতি। জাহাজটি প্রকৃতপক্ষে যেরূপ দেখিতে ছিল সেই চিত্ররূপের পরিবর্তে ইহা ছিল জাহাজটির একটি অতিরঞ্জিত বর্ণনামূলক চিত্র।
প্রথমে, সেই জাহাজ নির্ম্মাণের নির্দেশ প্রকাশ করিতেছে যে ইহা বাস্তবিকেই বৃহদায়তন বিশিষ্ট ছিল। ‘‘জাহাজ দীর্ঘে তিনশত হাত হইবে।’’ যদি এক কিউবিট এর মাপ আঠারো ইঞ্চির সমতুল হয়, তাহা হইলে জাহাজটি কত বড় ছিল উহার কিছু ধারণা ইহা আপনাকে দিতেছে।
প্রশ্ন হইতেছে ইহাই যে সেই সময়ে কিভাবে তাহারা জাহাজটিকে দৃঢ়কায় করিয়া প্রস্তুত করিয়াছিল। আমার বন্ধুগণ, আমরা গুহাবাসীদের লইয়া চর্চা করিতেছি না। আমরা একজন অতি বুদ্ধিমান মানুষের বিষয়ে বলিতেছি। আপনারা দেখুন যে, সেই বুদ্ধিমত্তা যাহা বর্তমানে জাতির নিকটে রহিয়াছে, উহা সরাসরি নোহের নিকট হইতেই প্রাপ্ত হইয়াছে এবং তাহাকে একজন অতি বুদ্ধিমান মানুষ হইতেই হইয়াছে।
নোহ পঞ্চাশ-ফুট উচ্চ ঢেউ সহ্য করিবার জন্য সমুদ্রগামী জাহাজ নির্ম্মাণ করিতেছেন না।! যাহা তিনি নির্ম্মণ করিতেছেন উহা হইতেছে জীবন ধারণের একটি স্থান, প্রাণী এবং মনুষ্য জীবন, বেশ কিছু কালের জন্য ভাসিয়া থাকিতে - একটি ঝড়ের মধ্য দিয়া অতিক্রম করিবার জন্য নহে, কিন্তু কেবলমাত্র প্লাবন সরিয়া যাইবার অপেক্ষায় থাকিবার জন্য। সেই কারণে, এই জাহাজটির সেই আচরণ হয়ত অনুপস্থিত থাকিবে, যাহা আপনি একটি সমুদ্রগামী জাহাজের মধ্যে দেখিতে পাবেন। জাহাজটি আমাদের বলে যে পরিত্রাণ পেতে আমরা যেন অবশ্যই খ্রীষ্টের মধ্যে থাকি।
‘‘আর সদাপ্রভু নোহকে কহিলেন, তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর’’ (আদিপুস্তক ৭:১)।
এখন আদিপুস্তকের সাত নম্বর অধ্যায়ের, ষোল নম্বর পদটি শুনুন:
‘‘ফলত তাঁহার প্রতি ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে সমস্ত প্রাণীর স্ত্রীপুরুষ প্রবেশ করিল| পরে সদাপ্রভু তাঁহার পশ্চাৎ দ্বার বদ্ধ করিলেন’’ (আদিপুস্তক ৭:১৬)।
আর সাত নম্বর পদটি বলছে:
‘‘জলপ্লাবনের অপেক্ষাতে নোহ ও তাঁহার পুত্রগণ এবং তাঁহার স্ত্রী ও পুত্র বধূগণ জাহাজে প্রবেশ করিলেন’’ (আদিপুস্তক ৭:৭)।
‘‘জলপ্লাবনের অপেক্ষাতে নোহ ও তাঁহার পুত্রগণ এবং তাঁহার স্ত্রী ও পুত্র বধূগণ জাহাজে প্রবেশ করিলেন’’ (আদিপুস্তক ৭:৭)।
নোহ এবং তাঁর পরিবার তাই করেছিলেন যা ঈশ্বর তাদের করতে বলেছিলেন (আদিপুস্তক ৭:১)। তারা জাহাজটির মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন। এবং অবশ্যই আপনাকেও খ্রীষ্টে প্রবেশ করতে হবে। বাইবেল বলছে,
‘‘যে তাঁহাতে [যীশুতে] বিশ্বাস করে, তাহার বিচার করা যায় না...’’ (যোহন ৩:৩৮)।
‘‘on’’ শব্দটি অনুবাদিত হয়েছে ‘‘eis’’ শব্দ থেকে। এর মানে হল ‘‘একটি স্থানে বা বিষয়ে প্রেরণার প্রাথমিক ধারণা। আপনি অবশ্যই বিশ্বাসের দ্বারা যীশুর কাছে ভিতরে আসুন - স্বর্গে, ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে। ঠিক যেমনভাবে নোহ জাহাজটিতে এসেছিলেন, আপনাকেও অবশ্যই সেইভাবে যীশুতে আসতে হবে। ‘‘যে তাঁহাতে [তাঁর মধ্যে] বিশ্বাস করে, তাহার বিচার করা যায় না...’’ (যোহন ৩:১৮) ।অনেক বার বাইবেল তাদের সম্বন্ধে বলেছে যারা ‘‘খ্রীষ্টে’’ রয়েছেন| এখানে দুটি সুবিদিত পদের উল্লেখ করা হল:
‘‘অতএব এখন, যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই...’’ (রোমীয় ৮:১)।
‘‘অতএব এখন, যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই...’’ (রোমীয় ৮:১)।
‘‘ফলত: কেহ যদি খ্রীষ্টে থাকে, তবে নূতন সৃষ্টি হইল...’’ ( ২ করিন্থীয় ৫:১৭)।
পৌল তাদের সম্বন্ধে বলেছিলেন যারা ‘‘খ্রীষ্টে ছিলেন’’ (রোমীয় ১৬:৭)।
আপনি কি খ্রীষ্টের মধ্যে আছেন? আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর কাছে আসতে হবে, ঠিক যেমন নোহ সেই জাহাজটিতে এসেছিলেন।
যীশু বলেছিলেন,‘‘আমিই দ্বার, আমা দিয়া যদি কেহ প্রবেশ করে, সে পরিত্রাণ পাইবে’’ (যোহন ১০:৯)।
আমি জানি না যে ঠিক কিভাবে এর ব্যাখ্যা করা যায় কিন্তু এই সেবা কাজের সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলির মধ্যে একটি হল আপাতদৃষ্টিতে সহজ সেই ধারণাটি উপলব্ধি করার মতন লোক খুঁজে পাওয়া, যা হল: খ্রীষ্টের কাছে আসুন।
খ্রীষ্টে আসুন! আসুন এইভাবে বলছি। মনে করুন যে আপনি নোহের সময়ে বসবাস করছিলেন এবং এক মহাপ্লাবন আসন্ন বলে নোহকে প্রচার করতে শুনেছিলেন। আর আপনি তাকে বলতে শুনলেন যে পরিত্রাণ পেতে হলে আপনাকে জাহাজে প্রবেশ করতে হবে। ‘‘হ্যাঁ,’’ আপনি বলছেন, ‘‘এটা সত্যি। বিচার আসছে। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে, একমাত্র জাহাজটিই আমাকে রক্ষা করতে পারে। আমি সেটা বিশ্বাস করি।’’ আপনি কি মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পাবেন? অবশ্যই না ! রক্ষা পেতে হলে প্রকৃতপক্ষে আপনাকে উঠতে হবে এবং জাহাজের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে - শুধুমাত্র এই বিশ্বাস করা নয় যে এটা আপনাকে রক্ষা করতে পারে - পরিবর্তে এর মধ্যে প্রবেশ করুন! আর সেটাই আমি আপনাকে করতে বলছি! ওখানে বসে থাকবেন না এবং বিশ্বাস করুন যে খ্রীষ্ট আপনাকে উদ্ধার করতে পারেন! বিশ্বাসের দ্বারা খ্রীষ্টের কাছে আসুন! যীশু বলেছিলেন:
‘‘যে আমার কাছে আসিবে, তাহাকে আমি কোন মতে বাহিরে ফেলিয়া দিব না’’ (যোহন ৬:৩৭)।
হ্যাঁ, সেই জাহাজ বলছে যে আপনাকে অবশ্যই খ্রীষ্টের মধ্যে আসতে হব?

Comments
Post a Comment