শয়তানের কাজের পদ্ধতি: ক্রুশ নয় কিন্তু শয়তানের প্রতি প্রণামই যথেষ্ট
ভূমিকা : প্রভু যীশু তাঁর বাপ্তিন্ম গ্রহণের পরে এবং পরিচর্যা কাজ শুরু করার আরম্ভে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ও পরিচালনায় প্রান্তরে ৪০ দিন উপবাস করার সময় শয়তান দ্বারা বিভিন্ন ভাবে পরিক্ষীত বা প্রলোভিত হোন যা মথি, মার্ক ও লূক লিখিত সুসমাচারে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে (মথি ৪:১-১১,মার্ক ১:১২,লূক ৪:১-১৩) । আমরা যদি লূক লিখিত সুসমাচারে যাই তাহলে শয়তান কর্তৃক দ্বিতীয় পরীক্ষায় প্রভু যীশুকে বলেছিলেন ,
"পরে সে তাঁহাকে উপরে লইয়া গিয়া মুহূর্তকালের মধ্যে জগতের সমস্ত রাজ্য দেখাইল। আর দিয়াবল তাঁহাকে বলিল, তোমাকেই আমি এই সমস্ত কর্তৃত্ব ও এই সকলের প্রতাপ দিব; কেননা ইহা আমার কাছে সমর্পিত হইয়াছে, আর আমার যাহাকে ইচ্ছা, তাহাকে দান করি; অতএব তুমি যদি আমার সম্মুখে পড়িয়া প্রণাম কর, তবে এই সকলই তোমার হইবে।"
(লূক ৪:৫-৭)
শয়তান কেন এমন লোভনীয় প্রভু যীশুকে প্রলোভন দেখিয়েছিল ?
🛑প্রথমতঃ শয়তান খুব ভাল করে জানত , প্রভু যীশু এই জগতে এসেছিলেন মসীহের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে ( Messianic Kingdom) এবং এই রাজ্যের রাজা তিনি ।
প্রভু যীশুর জন্মের সময় স্বর্গদূত তৎকালীন কুমারী মরিয়মের কাছে ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রভু যীশুর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে সেই রাজত্ব যার কখনও শেষ হবে না । তিনি বলেছিলেন ,
"আর দেখ, তুমি গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবে, ও তাঁহার নাম যীশু রাখিবে। তিনি মহান হইবেন, আর তাঁহাকে পরাৎপরের পুত্র বলা যাইবে; আর প্রভু ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ূদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; তিনি যাকোব-কুলের উপরে যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন, ও তাঁহার রাজ্যের শেষ হইবে না।"
(লূক ১:৩১-৩৩ )
এখন শয়তান ঘোষণা করছে প্রভু যীশু যদি তাকে আরাধনা করে সে এই জগতের রাজ্যের সাথে মহিমা দিবেন। তিনি বুঝিয়েছেন তাকে প্রণাম করলে ও তার সাথে আপোষ করলে প্রতিজ্ঞাত মসীহের রাজ্য দিবেন । এভাবে প্রভু যীশু তাঁর কষ্ট ও দুঃখভোগ ছাড়া সেই মসীত্বের রাজ্যের অধিকারী হবেন। শয়তান যে আহ্বান জানিয়েছেন তা সে করতে পারে কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে তা ছিল মিথ্যা । ঈশ্বরের বাক্য আমাদের নিশ্চিত করে , সমস্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব একমাত্র ঈশ্বরের কিন্তু শয়তান হচ্ছে প্রতারকের মাথা যিনি প্রথম থেকেই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন ।
🛑দ্বিতীয়তঃ এটি সত্য যে , ঈশ্বর শয়তানকে এই জগতের রাজ্যে অনেক কিছু করার অনুমতি দেয় যার কারণে প্রভু যীশু শয়তানকে জগতের অধিপতি হিসাবে বলেছেন (যোহন ১২:৩১,১৪:৩০,১৬:১১) । ঈশ্বর কখনও তাঁর রাজ্যের ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্বের অধিকারী শয়তানকে হতে দেয় না । জগতে যাই কিছুই ঘটুক না কেন ঈশ্বর এর থেকে তাঁর মহিমা ও গৌরব নিয়ে আসেন । তাঁর হাত থেকে তাঁর ক্ষমতা কখনও পিছলে পড়ে না । ভাববাদী দানিয়েল এ সম্পর্কে বলেছিলেন ,
"এই বার্তা প্রহরিবর্গের আদেশে, ও এই বিষয়টি পবিত্রগণের কথায় দত্ত হইল; অভিপ্রায় এই, যেন জীবিত লোকেরা জানিতে পারে যে, মনুষ্যদের রাজ্যে পরাৎপর কর্তৃত্ব করেন, যাহাকে তাহা দিতে ইচ্ছা করেন, তাহাকে তাহা দেন, ও মনুষ্যদের মধ্যে অতি নীচ ব্যক্তিকে তাহার উপরে নিযুক্ত করেন।"
(দানিয়েল ৪:৪-১৭)
তৃতীয়ত: ত্রিত্ব ঈশ্বরের মাঝে breach তৈরী করা । এই সম্পর্কে Dr. John Macarthur তাঁর প্রচারে বলেছিলেন যে , শয়তান অবশ্যই ত্রিত্ব ঈশ্বর সম্পর্কে বিশ্বাস ( মৃত বিশ্বাস) করে। শয়তান প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্বে বিশ্বাস করে। কিন্তু প্রভু যীশুকে প্রলোভনের মধ্য দিয়ে শুধু প্রভু যীশুকে ধ্বংস করা নয় কিন্তু ত্রিত্ব ঈশ্বরকে যেন ধ্বংস করতে পারেন । শয়তান চেয়েছে ত্রিত্ব ঈশ্বরের মাঝে বিদ্রোহী মনোভাব নিয়ে আসা। এখন আমাদের মনে রাখতে হবে, ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে এই জগতে পাঠালেন । পিতার প্রতি
অধিনস্হ হয়ে পুত্র যীশু তাঁর স্বর্গের উচ্চাসন ছেড়ে এসেছেন । তাঁর পরিচর্যা কাজে তিনি তাঁর ঈশ্বরত্ত্বকে পৃথক বা আলাদা রেখে স্বতন্ত্রভাবে তাঁর সমস্ত শক্তিকে ব্যবহার করেননি। এমনবস্হায় তিনি ঈশ্বরই রইলেন , নিজেকে হ্রাস করেননি ; প্রকৃতপক্ষে তাঁর মানব দেহের স্বভাবের জন্য তিনি ঈশ্বর-মানবও বটে। তিনি নিজেকে নত করে ঈশ্বরত্বের ক্ষমতাকে ব্যবহার না করে পিতার ইচ্ছায় পবিত্র আত্মার শক্তিতে বলবান হয়েছেন। সে কারণে তিনি ঈশ্বর-মানব হলেও মানুষের মত কাজ করেছেন যা মানুষের জন্য করণীয় । তিনি তাঁর ঈশ্বরত্ত্বকে ছোট করেছেন পিতার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে পবিত্র আত্মায় কাজ করেছেন । প্রভু যীশুর প্রলোভনের সময় শয়তান চেয়েছেন যেন তিনি পিতা ঈশ্বরের পরিকল্পনার ও পবিত্র আত্মার শক্তির বিরোধীতা করেন এবং তিনি নিজে কাজ করে ত্রিত্ব ঈশ্বরের সম্পর্ক ভেঙে দিয়ে সমস্ত বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে বিশৃঙ্খলা তৈরী করেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে এই প্রলোভনে সামান্য কিছু ঘটেছে , তা নয়। এখানে একটি চরম যুদ্ধ হতেছিল যা শুধু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্ত্ব না কিন্তু ত্রিত্ব ঈশ্বরের একতা নষ্ট হয়। কিন্তু শয়তান তা করতে ব্যর্থ হয়েছে । Dr. John MacArthur প্রভু যীশুর শয়তানের উপরে বিজয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন , ঈশ্বর পুত্র প্রলোভনে জয়ী হয়ে প্রমাণ করলেন তাঁর মসীত্বের দাবী সত্য । আরও প্রমাণ করে তাঁর ঈশ্বরত্ত্ব । তিনি যদি ঈশ্বর হয়ে থাকেন তাঁকে শয়তানের উপর জয়ী হতে হবে ও প্রলোভনের উপর জয়ী হতে হবে। তাঁকে আমাদের জন্য পাপের উপরে জয়ী হতে হবে। তিনি যদি পাপ ও শয়তানের উপর বিজয়ী হতে চান তাহলে পাপ ও শয়তানকে পরাজিত করতে হবে। সে কিভাবে পাপীর পাপ , মৃত্যু ও নরক থেকে রক্ষা করবেন যদি না তিনি শয়তানকে পরাজিত করতে না পারেন ?
অধিকন্তু, শয়তান দ্বিতীয় প্রলোভনের মধ্য দিয়ে অন্য ভাষায় বুঝাতে চেয়েছিল এভাবে
" আমি তোমার জীবন সহজ করে দিতে পারি কারণ তুমি এর যোগ্য কারণ তুমি ঈশ্বরের পুত্র । কারণ তুমি পূর্বে তোমার বাপ্তিম্মের সময় স্বর্গ থেকে এই বচন শুনেছ , ‘‘তুমি আমার প্রিয় পুত্র, তোমাতেই আমি প্রীত।”
(লূক ৩:২২)
তোমার তো নিজের রাজ্য থাকার কথা , শাসন কর্তা হওয়ার কথা , তোমার তো সব কিছু থাকার কথা ছিল । কিন্ত আমি এখন তোমায় বলতে পারি, এই সমস্ত আমাকে দত্ত হয়েছে এবং আমি তা তোমাকে আনন্দের সাথে দিতে প্রস্তুত । অবশ্যই আমি তোমাকে দিব । তুমি সরাসরি রাজার মুকুটটি পড়তে পারবে। তুমি ক্রুশের কথা ভুলে যেতে পারবে, এ পর্যন্ত তোমার অনেক দুঃখভোগ হয়েছে । তোমার পরবর্তী তিনবছরের যন্ত্রণা প্রয়োজন নেই। নাসারতে আর যাওয়া প্রয়োজন নেই যেখানে তোমাকে পাহাড়ের চুড়া থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবে। তোমাকে আর যিরূশালেমে যেতে হবে না কারণ তোমাকে সবাই ঘৃণা করে এবং তোমার মৃত্যুর জন্য ষড়যন্ত্র করে। অবশ্যই তোমার চাবুকের আঘাত সহ্য করার প্রয়োজন নেই যা তোমাকে মৃত্যুর কাছে নিয়ে যাবে। তোমার ক্রুশে যাওয়া প্রয়োজন নেই যেখানে তোমাকে পেরেকে গাঁথা হবে, কাঁটার মুকুট মাথায় পরানো হবে । তোমার তো এমন ভয়ংকর মৃত্যুবরণ করার কোন প্রয়োজনও নেই।এখন শুন , আমি তোমাকে সমস্ত কিছু স্বেচ্ছায় দিতে চাই। কিন্তু শুধু একটিমাত্র শর্তে ।" শর্তটি কি ? শয়তান প্রভু যীশুকে সেই শর্ত এভাবে বলেছিলেন,"অতএব তুমি যদি আমার সম্মুখে পড়িয়া প্রণাম কর, তবে এই সকলই তোমার হইবে।" (লূক ৪:৭)
শয়তানের সমস্যা:
🛑🌏🔮🛑🔮🌏🔮
এখানে শয়তানের একটি সমস্যা আছে। সমস্যাটি কি ? স্বর্গে শয়তান আরাধনা পেতে চেয়েছিল যার কারণে তাকে স্বর্গ থেকে বের করে দেওয়া হয় । শয়তানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিচের পদে স্পষ্ট হয়েছে ,আমি মেঘরূপ উচ্চস্থলীর উপরে উঠিব, আমি পরাৎপরের তুল্য হইব।’ (যিশাইয় ১৪:১৪ )
শয়তান এ রকমই । তার এই রকম বিদ্রোহের জন্য স্বর্গ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং সে ও তার সংগীদের জন্য অগ্নিময় হ্রদ বা নরক অপেক্ষা করছে। শয়তান কখনও পরিবর্তন হয় নাই। সে এখনও মানুষের আরাধনা চায় । সেই জন্য বিভিন্ন ধর্ম মতের সৃষ্টি করেছে যা তাকেই বিভিন্ন ভাবে উপাসনা করা হচ্ছে । পবিত্র বাইবেল এ রকম অনেক ভ্রান্ত দেব দেবতা, ভ্রান্ত ঈশ্বরের ও ভ্রান্তমতের কথা বলে যা মানুষ এখনও করছে বিভিন্ন ধর্মের নামে। প্রকৃতপক্ষে তারা শয়তানের উপাসনা করছে আকারে বা নিরাকারে।
শয়তানের চরম ইচ্ছা কি ছিল ?
🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮
শয়তান শুধু এখানেই বসেই থাকেনি তার একান্ত ইচ্ছা ঈশ্বর পুত্রের তাকে যেন আরাধনা করে । এটাই যা তার শেষ ইচ্ছা । কল্পনা করে দেখেন প্রভু যীশু ঈশ্বরের উপাসনা বাদ দিয়ে যদি শয়তানের উপাসনা করত তাহলে কি হত ? তা হতো এই রকম : শয়তান পূর্ব থেকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এই পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন যেন সে আরাধনা পেতে পারেন ও ঈশ্বরের মতো হতে পারেন । আর এই প্রলোভনে যদি ত্রিত্ব ঈশ্বরের দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছ থেকে তা অর্জন করতে পারে তাহলে তার ঘৃণ্য ইচ্ছা যা আদিতে করেছিলেন তার পূর্ণতা পাবে। শয়তানের আরাধনা প্রাপ্তির যে আকাঙ্খা ও অভিশাষ তা জানতে হলে আমাদের যিশাইয় ১৪ ও যিহিষ্কেল ২৮ অধ্যায় থেকে পড়তে হবে যেখানে তার আরাধনা প্রাপ্তির বাসনার কথা বর্ণনা করা হয়েছে । তার ঘৃণ্য আশা পূরণ করার জন্য শয়তান প্রভু যীশুকে বলেছিলেন ,
"অতএব তুমি যদি আমার সম্মুখে পড়িয়া প্রণাম কর, তবে এই সকলই তোমার হইবে।
(লূক ৪:৭)
তার মানে কি ? শয়তান বলছেন প্রভু যীশুকে আমাকে তোমার প্রভু হিসাবে প্রণাম কর তাহলে সব কিছুই হবে তোমার।
প্রকৃতপক্ষে আপনারা জানেন যে , এটি একটি চরম মিথ্যা কথা। কারণ শয়তান মিথ্যার পিতা।
প্রভু যীশু শয়তান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন ,
"তোমরা তোমাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি হইতেই নরঘাতক, সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা।" (যোহন ৮:৪৪)
প্রভু যীশুকে প্রলোভনের মধ্য দিয়ে শয়তান মিথ্যা বলেছিলেন যেন প্রভু যীশু ক্রুশ এড়িয়ে যেতে পারেন। প্রভু যীশুকে দেওয়ার মত শয়তানের আসলে কিছু নেই । কেননা ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব সমস্ত জায়গায় প্রতিষ্ঠিত । প্রভুর বাক্য এই কথা বলে ,
"সদাপ্রভু স্বর্গে আপন সিংহাসন স্থাপন করিয়াছেন, তাঁহার রাজ্য কর্তৃত্ব করে সমস্তের উপরে।" (গীত ১০৩:১৯)
সে শুধু ঈশ্বরের মহিমা ও পরিকল্পনা ধ্বংস করতে চেয়েছে যা ছিল তার অহংকার ও গর্ব ।
তাহলে আমরা সারাংশে দেখি শয়তান আসলে তার দেয়া প্রলোভনের মধ্য কি বুঝাতে চেয়েছে ?
প্রথমতঃ পিতা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ততা যেন ঈশ্বর পুত্র প্রভু যীশু যেন ত্যাগ করেন।
দ্বিতীয়তঃ শয়তান নিজে প্রভু যীশুকে উপাসনা করতে বলেছিলেন যেন প্রভু যীশু ঈশ্বরের দেওয়া দশ আজ্ঞার প্রথম আজ্ঞা যেন অমান্য করে (যাত্রা ২০:৩)।
তৃতীয়তঃ শয়তানের সাথে প্রভু যীশু যেন সন্ধি বা Alliance করেন ।
চতুর্থতঃ খ্রীষ্ট প্রভু যে দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে অর্থাৎ ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পাপী মানুষের জন্য পরিত্রাণ সম্পন্ন করবেন তা ভেংগে দেওয়া । তাছাড়া শয়তান পিতা ঈশ্বর কর্তৃক যে রাজ্যের কথা তাঁর পুত্রে সম্পন্ন করবেন তা দিতে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । এর প্রধান কারণ ছিল প্রভু যীশুকে যেন তাঁর কাজের track থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেন এবং সামনে যে তাঁর public তিন বৎসরের পরিচর্যা কাজ তা ধ্বংস করা।
পঞ্চমতঃ ক্রুশে মৃত্যু বরণ না করে যেন ক্ষমতা অর্জন করেন ।
এখন আমরা দেখব , শয়তানের মন্দ ক্ষমতা সম্পর্কে পবিত্র বাইবেল কি বলে ?
শয়তানের অনেক ক্ষমতার কথা পবিত্র বাইবেল বলে :
🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏
প্রথমতঃ জগতের অধিপতি :
"এখন এই জগতের বিচার উপস্থিত, এখন এই জগতের অধিপতি বাহিরে নিক্ষিপ্ত হইবে।"
(যোহন ১২:৩১ )
দ্বিতীয়তঃ এই যুগের দেবতা :
"তাহাদের মধ্যে এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করিয়াছে, যেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি যে খ্রীষ্ট, তাঁহার গৌরবের সুসমাচার-দীপ্তি তাহাদের প্রতি উদয় না হয়।"
(২ করিন্থীয় ৪:৪ )
তৃতীয়তঃ আকাশের কর্তৃত্বের অধিকারী :
"সেই সকলেতে তোমরা পূর্বে চলিতে, এই জগতের যুগ অনুসারে, আকাশের কর্তৃত্বাধিপতির অনুসারে, যে আত্মা এখন অবাধ্যতার সন্তানগণের মধ্যে কার্য করিতেছে, সেই আত্মার অধিপতির অনুসারে চলিতে। (ইফিষীয় ২:২)
প্রভু যীশু কিভাবে শয়তানের প্রলোভন মোকাবেলা করেছেন ?
এক কথায় ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা । তিনি তাঁর প্রান্তরে প্রতি প্রলোভনে ঈশ্বরের বাক্যের প্রয়োগ পবিত্র আত্মায় প্রয়োগ করেছেন। আমরা আজকের শয়তানের প্রলোভনে যদিও শয়তান অনেক কিছু প্রতিজ্ঞা করে কিন্তু কখনও ইচ্ছা পূরণ করতে পারে না । আরও যদি উদাহরণ দেখি, আমাদের আদি মাতা হবাকে শয়তান যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা ছিল মিথ্যা ও অন্ধ মোহে পূর্ণ । যেমন: শয়তান তাদের বলেছিলেন তারা যদি সেই ফল ঈশ্বরের মত হবে। প্রভু যীশুর ক্ষেত্রে তাই করেছে। শয়তানের কথা শ্রবণ করার আরেক অর্থ হচ্ছে - কোন কিছুই অর্জন হয় না কিন্তু সবই হারাতে হয় । শয়তানের কাজ খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের খ্রীষ্টের পথ থেকে ছিটকে ফেলে পতিত করা । শয়তান প্রভু যীশুর ক্ষেত্রে তাই করতে চেয়েছিল যেন পৃথিবীতে তাঁর আসার প্রধান কারণ পাপী মানুষের মুক্তির মূল্য তা যেন ক্রুশে তা পরিশোধ করতে না পারেন (মার্ক ১০:৪৫)। কিন্তু প্রভু যীশু শয়তানকে এই প্রলোভনের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করেছেন :
তিনি দ্বিতীয় বিবরণের ৬:১৩ পদ উল্লেখ করেছিলেন :
‘‘তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করিবে, কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে”। (লূক ৪:৮ )
প্রভু যীশু বুঝিয়েছেন, প্রকৃত আরাধনা ঈশ্বরের সেবার মধ্য দিয়েই আসে।
খ্রীষ্টীয় জীবনে ঈশ্বরের বাক্যের ব্যবহারের গুরুত্ব :
🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑🌏🔮🛑
রাজা দায়ুদ তাঁর প্রথম গীতে বলেছিলেন ,
"ধন্য সেই ব্যক্তি, যে দুষ্টদের মন্ত্রণায় চলে না, পাপীদের পথে দাঁড়ায় না, নিন্দুকদের সভায় বসে না। কিন্তু সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় আমোদ করে, তাঁহার ব্যবস্থা দিবারাত্র ধ্যান করে।" (গীত ১:১-২)
নতুন নিয়মে প্রেরিত পৌল বলেছেন খ্রীষ্ট ভক্তরা যেন আত্মার খড়গ অর্থাৎ ঈশ্বরের বাক্য ধারণ করে যেন শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
তিনি এ ভাবে বলেছেন ,
"আত্মার খড়্গ, অর্থাৎ ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ কর।" (ইফিষীয় ৬:১৭খ)
তিনি আরও বলেছেন ,
"খ্রীষ্টের বাক্য প্রচুররূপে তোমাদের অন্তরে বাস করুক; তোমরা সমস্ত বিজ্ঞতায় গীত, স্তোত্র ও আত্মিক সঙ্কীর্তন দ্বারা পরস্পর শিক্ষা ও চেতনা দান কর; অনুগ্রহে আপন আপন হৃদয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশে গান কর।" (কলসীয় ৩:১৬)
ঈশ্বরের বাক্যে পূর্ণ না থাকলে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা অতি সহজে শয়তান দ্বারা প্রতারিত ও পরাজিত হবে। প্রভু যীশু ঈশ্বর-মানব ও জীবন্ত ঈশ্বরের বাক্য হিসাবে যদি ঈশ্বরের বাক্যের প্রয়োজন পরে তাহলে আমাদের মত পতিত মানুষের জন্য কত না প্রয়োজন ।
🛑উপসংহার: আমরা সংক্ষেপে দেখেছি , শয়তানের কাজের একটি পদ্বতি যা প্রভু যীশুর দ্বিতীয় প্রলোভনের দ্বারা দালিলিক প্রমাণ হিসাবে আলোচনা করা হয়েছে । শয়তান চেয়েছে ঈশ্বরের মন্ত্রণা : প্রভু যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরিত্রাণের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে ও চেয়েছে নিজে আরাধনা পেতে । কিন্তু ঈশ্বর পুত্র প্রভু যীশু তা হতে দেননি । তিনি বিজয়ী হয়েছেন । তিনি শুধু প্রান্তরে নয় কিন্তু ক্রুশে জীবন দানের মধ্য দিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন । তার প্রমাণ তাঁর পুনরুত্থান । সেইজন্য শয়তান কখনও ঈশ্বরের পরিকল্পনা তাঁর প্রতারণার পদ্ধতি দিয়ে কখনও বিজয়ী হতে পারে নাই আর পারবেও না । সেইজন্য আমরা এমন প্রভুকে পেয়েছি যিনি আমাদের পতিত অবস্থাকে ধ্বংস করে তাঁর সাথে উত্থাপিত করেছেন । প্রভুর বাক্য আমাদের তাই বলে ,
"অতএব তোমরা যখন খ্রীষ্টের সহিত উত্থাপিত হইয়াছ, তখন সেই ঊর্ধ্বস্থানের বিষয় চেষ্টা কর, যেখানে খ্রীষ্ট আছেন, ঈশ্বরের দক্ষিণে বসিয়া আছেন।"
কেননা তোমরা মরিয়াছ, এবং তোমাদের জীবন খ্রীষ্টের সহিত ঈশ্বরে গুপ্ত রহিয়াছে। আমাদের জীবনস্বরূপ খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হইবেন, তখন তোমরাও তাঁহার সহিত সপ্রতাপে প্রকাশিত হইবে।"
(কলসীয় ৩:১,৩-৪ )।
অতএব , বিশ্বাসী জীবনের সমস্ত মলিনতা
ত্যাগ করে পবিত্র জীবনের দিকে দৃষ্টি দেই যেটাই ঈশ্বরের কাছ থেকে অন্যতম প্রত্যাশা।
Comments
Post a Comment