যীশু খ্রীষ্টই আপনার সমাধান, আপনি কি তা জানেন?
গৃহস্থ মণ্ডলীতে আপনাদের যীশু খ্রীষ্টের নামে স্বাগতম জানাই। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় দেওয়া হয়েছে গীত 121, কলসীয় 3:2, মার্ক লিখিত সুসমাচার 16:15-20।
আমরা সকলে গীতসংহিতা পড়তে খুব ভালোবাসি। বিশেষ করে কিছু কিছু গীত রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই মুখস্থ। তার মধ্যে এই 121 গীতও আমাদের অনেকেরই মুখস্থ। এই সময় এই গীতগুলির প্রচারও খুব হচ্ছে। 91 গীত টিও খুব পরিচিত আমাদের।
121 এর গীতের মধ্যে যে সুরক্ষা ও সাহায্যের প্রতিজ্ঞার কথা বলে তা কি আমি দাবি করতে পারি?
আমরা সাধারণত যার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক থাকে তার কাছেই এই বিষয়টির জন্য আশা করি। আমাদের সম্পর্ক পিতা ঈশ্বরের সাথে কেমন?
আজ যদি আমার জীবনে এই সুরক্ষা ও সাহায্যের অভাব দেখা দিয়েছে, তার প্রধান কারণ কি?
সম্পর্ক: আমার সঙ্গে পিতা ঈশ্বরের সম্পর্কের মধ্যে নিশ্চয় কোথাও কোনো না কোনো দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে বা ফাটল ধরেছে। আমরা জানি যে আমাদের পিতা ঈশ্বর করুনাময়ী, স্নেহশীল। তিঁনি আমাদের প্রচণ্ড ভালোবাসেন। তাঁর ভালোবাসার প্রমাণও আমরা দেখেছি। পিতা ঈশ্বর কাল, আজ ও যুগানুযুগ একই ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। তিঁনি পাপী কে ভালোবাসেন কিন্তু তিঁনি একটি জিনিস করতে পারেন না। আর তা হলো পাপ। এই পাপকে তিঁনি ঘৃণা করেন। এবং এই পাপ আমাদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। যার ফলে আজ হয়তো আমি সুরক্ষা ও সাহায্যের প্রয়োজন বোধ করছি। আমার সামনে আমার সমস্যা গুলি আজ পাহাড়ের মতন উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আজ আমরা ঈশ্বরের বাক্যতে নির্ভরশীল হতে পারিনা। বিশ্বাস করতে পারিনা। বাক্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারিনা। বাক্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করি, সন্দেহ করি ও সম্মান করিনা। আবার অনেকে আছি যারা শুধু প্রয়োজনের সময় নিজ স্বার্থ লাভের জন্য ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলির অন্বেষণ করি, দাবি করি। যার ফলে আমাদের সাহায্য ও সুরক্ষা পিতা থেকে আমরা পাইনা। আকাশ ও পৃথিবীর নির্মানকর্তার উপরে আমাদের আশা রাখিনা। আমরা আমাদের সাহায্য ও সুরক্ষার জন্য নিজেদের বল, বুদ্ধি, জ্ঞান ও মনুষ্যে নির্ভর করি। আমার চক্ষু এখন আর ঈশ্বরের খোঁজ করেনা কেননা তাঁর সঙ্গে আমরা সম্পর্ক খুব গভীর নয়। বছরের কয়েকটা দিন হয়তো তাঁর সানিধ্যে আসি আবার তাঁকে ভুলে যাই বা দূরে সরিয়ে রাখি। কারণ টা যদি অনুসন্ধান করতে যাই, তাহলে আমরা একটু দেখে নিই সাধুপৌল তার পত্রে কি লিখেছেন।
📖"জাগতিক বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে বরং স্বর্গীয় বিষয়ে মনোযোগ দাও।"
(কলসীয় 3:2)
কিন্তু আমরা কিছুতেই তা করতে পারছি না। তার প্রধান কারণ আমরা যীশুকে সম্পূর্ণ রূপে গ্রহণ করতে পারিনি। তাঁর সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারিনি, তাঁকে আমরা ঠিকমতো চিনতে ও জানতে পারিনি। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সহভাগিতাই হয়তো নেই। যার ফলে আমি জাগতিক বিষয়, প্রয়োজন, ভৌতিক আশীর্বাদ এই সমস্তর মধ্যে যীশুকে খুঁজে বেড়াচ্ছি ও পেতে চেষ্টা করছি। যার ফলে আমরা এক নতুন যীশুকে সৃষ্টি করে ফেলেছি। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, "আমার রাজ্য এজগতের নয়"।
আমরা আজ সেকথা ভুলে গিয়েছি বা যাচ্ছি। তাই আমরা যে দায়িত্ব পেয়েছি তাঁর কাছ হতে, সে বিষয়ে আমরা সচেতন ও সচেষ্ট নই। আমরা আমাদের দায়িত্ব কে অবহেলা করছি। প্রভুর কথার ও আদেশের কোনো গুরুত্বই দিইনা। তাই প্রভুও আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেন না। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের জানায়, "কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে।
(মথি। 6:33)"
আবার তিঁনি আমাদের আদেশ দিয়েছেন ও প্রতিজ্ঞা করেছেন, "অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।
(মথি 28:19-20)
কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা উপরক্ত দুটি বাক্যের মধ্যে শেষ বাক্যের উপরে জোর বেশি দিই। যেমনঃ আমরা তাঁর রাজ্য ও ধার্মিকতার বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে ওই সকল দ্রব্য যা আমাদের প্রয়োজন তার উপরে গুরুত্ব বেশি দিই। আবার আমরা সকলে মুখস্থ করে রেখেছি যে , প্রভু যীশু বলেছেন, "আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি"। কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে এই বাক্যের সাথে যে শর্ত আছে তার কথা। প্রভু যে দায়িত্ব আমাদের দিয়েছেন তা করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। প্রভু যীশু বলেছেন, "আমি তোমাদের যে সব আদেশ দিয়েছি তা পালন করতে তাদের শিক্ষা দাও"। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা নিজেরাই ঠিকমতন প্রভুর আদেশ সমন্ধে সচেতন নই, তা অন্য কে কিভাবে শিক্ষা দেব। অনেকে এমন আছেন যারা কোনদিনও বাইবেল পড়েন না, বা বছরে কয়েকটি দিন হয়তো, কিংবা মাসে কখনো কখনো পড়ে। বাক্যের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই। বাইবেল ঘরের কোনো একটি স্থানে যত্নের সাথে কিংবা এমনিই পরে আছে বা তোলা আছে। পারিবারিক প্রার্থনা ও বাইবেল অধ্যয়ন নেই। সত্যি বলতে কি নাম মাত্র খ্রীষ্ট বিশ্বাসী কিন্তু খ্রীষ্টের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই।
মার্ক লিখিত সুসমাচারের 16 অধ্যায়ের 17 থেকে 18 পদে বিশ্বাসীদের কিছু চিহ্নের কথা বলা হয়েছে যা আজ দুর্লভ হয়ে পড়েছে। আজকের বিশ্বাসী নকল চিহ্নের দিকে বেশি আকর্ষিত। কারণ বাক্যের সাথে কোনো সম্পর্কই নেই। আমরা 20 পদে লক্ষ্য করি:-
📖তারপর শিষ্যেরা বেরিয়ে পড়ে সর্বত্র প্রচার করতে লাগলেন। আর প্রভু তাঁদের সঙ্গী হয়ে কাজ করতে লাগলেন এবং সেই সঙ্গে কৃত বহু চিহ্নকর্মের মাধ্যমে তাঁর বাক্যের সত্যতা সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন। (মার্ক 16:20)
যখন আমি প্রভুর দেওয়া কাজ করবো তখন আমি একা নই, এই কথা যেন ভুলে না যাই। প্রভু তখন আমার সঙ্গে থাকেন ও আমার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করেন তাঁর বাক্যের সত্যতা প্রমাণের জন্য। তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে আমি দাবি করতে পারি। এবং প্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞানুযায়ী তা করবেন।
আমার সঙ্গে পিতার সম্পর্কের মধ্যে যেখানে ফাটল ধরেছে বা যেখান থেকে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে তা খুঁজে বার করতে হবে। প্রভু যীশু বলছেন, "তথাচ তোমার বিরুদ্ধে আমার কথা আছে, তুমি আপন প্রথম প্রেম পরিত্যাগ করিয়াছ। অতএব স্মরণ কর, কোথা হইতে পতিত হইয়াছ, এবং মন ফিরাও ও প্রথম কর্ম্ম সকল কর; নতুবা যদি মন না ফিরাও, আমি তোমার নিকটে আসিব ও তোমার দীপবৃক্ষ স্বস্থান হইতে দূর করিব। (প্রকাশিত বাক্য 2:4-5)।
এখনই সময় পিতার কাছে ফিরে আসার। পরে হয়তো অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে। পিতা দুই হাত বাড়িয়ে অপেক্ষায় আছেন তাঁর সমস্ত আশীর্বাদের প্রতিজ্ঞা যা তিঁনি আমাদের জন্য করেছেন তা পূরণ করার জন্য।
পিতা ঈশ্বর তাঁর এই বাক্যের দ্বারা আপনাকে প্রচুর আশীর্বাদ করুন এবং সকল প্রকার সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান করুন।
সদাপ্রভুই তোমার রক্ষক, সদাপ্রভুই তোমার ছায়া, তিনি তোমার দক্ষিণ পার্শ্বে। দিবসে সূর্য্য তোমাকে আঘাত করিবে না, রাত্রিতে চন্দ্রও করিবে না। সদাপ্রভু তোমাকে সমস্ত অমঙ্গল হইতে রক্ষা করিবেন; তিনি তোমার প্রাণ রক্ষা করিবেন। সদাপ্রভু তোমার বাহিরে যাওয়া ও তোমার ভিতরে আসা রক্ষা করিবেন, এখন অবধি চিরকাল পর্য্যন্ত।
(গীতসংহিতা । 121:5-8 )
আমেন।।
Comments
Post a Comment