আমি কি পবিত্রতায় চলছি?
আমরা যখন গাড়ি চালাই তখন আমরা খুব সাবধানে Traffic নিয়ম মেনে চলি। কোনোভাবেই যেন নিয়ম অগ্রাহ্য না হয় সে বিষয়ে আমরা খুব সচেতন থাকি। এই জগতের সকল আইনকানুন ব্যবস্থা আমরা সর্বোত্তম ভাবে মেনে চলার চেষ্টা করি। কারণ আমাদের জীবন যাত্রা যেন কোনো অসুবিধা ও আইনগত ঝামেলায় জড়িয়ে না পড়ে।
অথচ আমরা কিন্তু একটি বিষয়ে সচেতন নই যা আমাদের অনন্ত জীবনের সাথে জড়িত। আমরা খুব হাল্কা ভাবে নিয়ে নিই বিষয় টিকে।
আমরা আমাদের সন্তানদের (বাল্যকাল অবস্থায়) সব সময় চোখে চোখে রাখি। লক্ষ্য রাখি যেন রাস্তায় খেলতে চলে না যায়, আগুন কিংবা গভীর জলের পাশে যেন একা একা না চলে যায়। কারণ তার সুরক্ষার জন্য। ঠিক তেমনি আমাদের স্বর্গীয় পিতা ঈশ্বর চান আমরা যেন কখনোই তার অবাধ্য না হই এবং তাঁকে যেন কোনো ক্রমেই অগ্রাহ্য না করি। কারণ তাঁর অনন্তকালীন সুরক্ষার মধ্যে যেন আমরা সর্বদা থাকি। কিন্তু আমরা তা অবজ্ঞা করে আমাদের পিতা ঈশ্বরকে কে অগ্রাহ্য করি। আমরা গুরুত্ব দিইনা তাঁর বাক্য কে।
সাধুপৌল খুব সুন্দর ভাবে থিষলনীকীয় মণ্ডলী কে তাঁর লেখা প্রথম পত্রের মাধ্যমে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। প্রথমেই তিঁনি চেতনা সহকারে মণ্ডলীকে লিখেছেন, "কি রূপে চলিয়া ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে হয়"। তিন পদে তিঁনি মণ্ডলীকে জ্ঞাত করেছেন "ঈশ্বরের ইচ্ছা কি"।
বিশেষত, ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা; যে তোমরা ব্যভিচার থেকে দূরে থাক, তোমাদের প্রত্যেক জন শেখ যে পবিত্র ও সম্মানিত হয়ে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে কেমন করে বাস করতে হয়, যারা ঈশ্বরকে জানে না, সেই অইহূদির মত কামাভিলাষে নয়, কেউ যেন সীমা লঙ্ঘন করে এই ব্যাপারে নিজের ভাইকে না ঠকায়; কারণ আগে তোমাদেরকে যেমন সাবধান করেছি ও বলেছি, প্রভু এই সব পাপের জন্য সবাইকে শাস্তি দেবেন। কারণ ঈশ্বর আমাদেরকে অশুচিতার জন্য নয়, কিন্তু পবিত্রতার জন্য আহ্বান করেছেন।
(1 থিষলনীকীয় 4:3-7)
ব্যভিচার থেকে দূরে থাকো, পবিত্রতায় জীবন যাপনের নির্দেশ এবং 6 পদে পরিষ্কার ভাবে তিঁনি জানিয়েছেন, "প্রভু এই সকলের প্রতিফল দাতা"।
আমরা কি সত্যিই পবিত্রতায় ও সমাদের চলছি?
যদি না তাহলে প্রভু এই সব পাপের জন্য সবাইকে শাস্তি দেবেন।
আজ 90% বিশ্বাসী এই ভয়ানক পাপের স্বীকার ফলস্বরূপ আজ বিশ্বাসী পরজাতির ন্যায় কামাভিলাষে অপবিত্রতায় জীবন যাপন করছে। আজ বিশ্বাসীর জীবনে ঈশ্বর ভয় নেই বললেই চলে। হাঁ, ঈশ্বর ভয় না থাকার দরুন আমরা খুব সহজেই ঈশ্বরকে অগ্রাহ্য করি। ঈশ্বরের বাক্যের গুরুত্ব দিইনা। হালকাভাবে নিই বিষয় টিকে।
ইস্রায়েলের (যাকোব) বৃদ্ধাবস্থার প্রিয় সন্তান যোষেফের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যোষেফের জীবনের কার্যকলাপের মধ্যে আমরা লক্ষ্য করি তাঁর উন্নতির সর্বোত্তম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল "ঈশ্বর ভয়"। যদিও সে সময় ছিলোনা কোনো ঈশ্বরের বাক্য, আদেশ, ঈশ্বরীয় নিয়ম, শিক্ষা। ছিলোনা তাঁর কোনো ধর্মগুরু। ছিলোনা তাঁর কাছে আজকের মতোন কোনো ধর্মীয় শিক্ষাদীক্ষা, মণ্ডলী। কিন্তু যোষেফ ঈশ্বর ভয়ে পরিপূর্ণ ছিলেন।
বাইবেল বলে, "আর সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন এবং তিনি সমৃদ্ধিশালী হলেন ও নিজের মিশরীয় প্রভুর ঘরে থাকলেন। (আদিপুস্তক 39:2)
যোষেফের জীবনে ব্যভিচারের সুবর্ণ সুযোগ আসে। একবার নয় দুবার নয় বার বার এই সুযোগ তাঁর জীবনে আসে। যেখানে কোনো বাধা বিপত্তি ছিলোনা। কিন্তু শেষ চরম মুহূর্তে যোষেফ পালিয়ে যায়।
"পরে এক দিন যোষেফ কাজ করার জন্য ঘরের মধ্যে গেলেন, বাড়ির লোকদের মধ্যে অন্য কেউ সেখানে ছিল না, তখন সে যোষেফের পোশাক ধরে বলল, “আমার সঙ্গে শয়ন কর৷” কিন্তু যোষেফ তার হাতে নিজের পোশাক ফেলে বাইরে পালিয়ে গেলেন। (আদিপুস্তক 39:11-12)
এই ভয়ানক পাপ যোষেফ কে পরাজিত করতে পারেনি তার প্রধান কারণ ছিল "ঈশ্বর ভয়"।
শুনুন যোষেফের উক্তি:-
আদিপুস্তক 39:9
আজ আমাদের কাছে সব উপলব্ধ আছে যা যোষেফের কাছে ছিলোনা এবং যা যোষেফের কাছে ছিল তা আজ আমাদের মধ্যে নেই - ★ঈশ্বর ভয়★
সাধুপৌল আমাদের শিক্ষা দেয় ও উৎসাহিত করে দিয়াবলের নানাবিধ চাতুরির বা মন্দ পরিকল্পনার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করতে ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান করে যুদ্ধ করতে। কিন্তু ব্যভিচার থেকে আমাদের পালাতে আদেশ দেয়। কিন্তু তুমি যৌবনকালের মন্দ কামনা বাসনা থেকে পালাও ..... (2 তীমথিয় 2:22)।
পুরাতন নিয়মে পিতা ঈশ্বর আদেশ দিয়েছিলেন, "যে দিন সদসদ জ্ঞান দায়ক বৃক্ষের ফল খাবে, সেদিন মরবেই মরবে"।
নতুন নিয়মে আমাদের বলা হয়েছে:-"কারণ যদি দেহের ইচ্ছায় জীবন যাপন কর, তবে তোমরা নিশ্চিত ভাবে মরবে, (রোমীয় 8:13)
আমরা যদি ঈশ্বরের অধীনে থাকার গুরুত্ব না বুঝি বা না দিই, তাহলে আমরা খুব সহজেই দেহের বশে চলবো যা আমাদের অনন্ত নরকের দিকে নিয়ে যায়।
যাকোব তাঁর পত্রে লিখেছেন:-
"অতএব তোমরা নিজেদেরকে ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও; ...(যাকোব 4:7)
আমরা যখন সম্পূর্ণ রূপে ঈশ্বরের অধীনে নিজেদের সঁপে দিই, তখন পবিত্র আত্মা কে আমরা সুযোগ দিই আমাদের জীবনে কার্য করার জন্য। আর তখন পবিত্র আত্মা দেহের সব খারাপ কাজগুলি মেরে ফেলে।
সাধুপৌল পবিত্র আত্মার চালনায় রোমীয় মণ্ডলীকে লিখেছেন:-
"কারণ যারা দেহের বশে আছে, তারা দেহের বিষয়ের দিকেই মনোযোগ দেয়; কিন্তু যারা আত্মার অধীনে আছে, তারা আত্মিক বিষয় এর দিকে মনোযোগ দেয়। কারণ দেহের মনোবৃত্তি হলো মৃত্যু কিন্তু আত্মার মনোবৃত্তি জীবন ও শান্তি। কারণ দেহের মনোবৃত্তি হলো ঈশ্বরের বিরুদ্ধতা, আর তা ঈশ্বরের আইন মেনে চলতে পারে না, বাস্তবে হতে পারেও না। যারা দেহের অধীনে থাকে তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম নয়।(রোমীয় 8:5-8)
66 খ্রীষ্টাব্দে 60 বছর বয়সে বৃদ্ধ পৌল করিন্থ থেকে তীত কে পত্র মারফৎ জানান:-
"এই অনুগ্রহ অভক্তি এবং সাংসারিক অভিলাষকে উপেক্ষা করতে এবং এই বর্তমান যুগে আত্মসংযমী, সৎ ও ভক্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আমাদের শিক্ষা দেয়, (তীত 2:12)
আবার করিন্থ মণ্ডলীকে লিখেছেন:- "অথবা তোমরা কি জান না যে, অধার্মিকেরা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাবে না? নিজেদের ঠকিও না; যারা ব্যভিচারী, যারা প্রতিমা পূজারী, কি পুরুষ বেশ্যা, কি সমকামী, (1 করিন্থীয় 6:9)
আমাদের প্রভু যীশু কি বলেছেন দেখুনঃ-
আর জগত ও তার কামনা বাসনা সব শেষ হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু যারা ঈশ্বরের ইচ্ছা মেনে চলে সে চিরকাল থাকবে।(1 যোহন 2:17)
আমরা যদি নিজেদের কে পবিত্র আত্মার চালনায় সম্পূর্ণ রূপে সমর্পণ করি তবেই আমরা দেহের সব খারাপ কাজগুলি মেরে ফেলতে পারবো।কারণ যত লোক ঈশ্বরের আত্মায় পরিচালিত হয় তারা সবাই ঈশ্বরের পুত্র।(রোমীয় 8:14)
জয় যীশু.
আমেন।।
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
আপনার অনুদান পাঠানোর জন্য ক্লিক করুন নিচে দেওয়া Donate অপশানে ⇓
আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে Click করুন.
আপনার অনুদান পাঠানোর জন্য ক্লিক করুন নিচে দেওয়া Donate অপশানে ⇓

Comments
Post a Comment