পরের বউ থেকে সাবধান
সাধু দাউদের পতন থেকে শিক্ষা :-
রাজা দাউদ ছিলেন ঈশ্বরের মনের মত লোক । রাজা শৌলের অবাধ্যতার জন্যই যিহুদা বংশের যিশয়ের ছেলে মেষ পালক বীনা বাদক দাউদকে বালক থাকতেই ভাববাদী ও বিচারক শমূয়েল মধ্যে দিয়ে রাজা হিসেবে অভিষেক করা হয় । রাজা শৌলের হয়ে ইসরাইলের প্রতিবেশী রাজ্য গুলোর সাথে যুদ্ধ করতেনও দাউদ। তাছাড়া রাজা শৌল যিনি ছিলেন দাউদের শশুর তিনিই ঈর্ষা বশত বেশ কয়েক বার হত্যা করতে চেযেছেন । তবুও ঈশ্বর দাযূদের সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করেন । পরবর্তিতে শৌলের আত্মহত্যার কারণে দাউদ হিব্রুনে রাজা হিসাবে অভিষেক হয়ে সাত বছর রাজত্ব করার পরে সমস্ত ইসরাইলের উপর রাজত্ব করেন সর্বমোট ৪০ বৎসর।
দায়ুদের পাপ:
রাজা দাউদ সেনাপতি যোযাবের নেতৃত্বে অম্মনের রাজধানী রব্বা নগরী যখনি অবরুদ্ধ তখন দাযূদ রাজবাড়ি যিরুশালেমে ছিলেন । ছাদে ভ্রমণ করার সময়। সৈনিক উরিয়ের স্ত্রী বৎসেবা প্রতি লালসাগ্রন্থ হয়ে তার জৈবিক চাহিদা মিটিয়ে ছিলেন । পরবর্তীতে বৎশেবা খবর পাঠান তিনি সন্তান সম্ভবা। এই সংবাদে দাযূদ তার পাপ ঢাকার জন্য অনেক মন্দ পরিকল্পনা করেন ।
প্রথম পরিকল্পনা : যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে উরিযকে যিরুশালেমে নিজগৃহে যাওয়ার জন্য তাগিদ দেন । মুলত দাওদ চেয়ে ছিলেন সবাই ভাববে আগত সন্তান পরিচিত হবে উরিযের নামে । কিন্তুু উরিয অত্যন্ত ত্যাগি যুদ্ধা ছিলেন । তিনি তার স্ত্রীর কাছে যাননি এমনকি দাউদ তাকে দ্রাক্ষারস পান করায় হয়তো লটের মত করবেন। তবুও উরিয় তার প্রকৃত জ্ঞান হারাযনি ।
দ্বিতীয় পরিকল্পনা :- দাযূদ এবার উরিয়কে নিয়ে মৃত্যুর পরিকল্পনা করলেন । তিনি উরিযকে দিয়েই তার মৃত্যুর খবর পৌঁছে দিলেন সেনাপতি যোযাবের হাতে । দাযূদের আদেশ মতে, যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রেখে সৈন্যরা পিছনের সরে আসে । যার কারণে সহযোদ্ধাদের সাহসের অভাবে উরিয সহ কয়েক জন মরা যান ২ শমূযেলের ১১:১৭ পদ । পরে তিনি বৎশেবাকে স্রী হিসেবে গ্রহণ করেন । ঈশ্বরের দৃষ্টিতে দাউদের এই পাপ ছিল অত্যন্ত ঘৃণিত । সে জন্য ঈশ্বর সমসাময়িক ভাববাদী নাথনকে পাঠালেন । নাথন ঈশ্বরের দন্ডজ্ঞা নিয়ে রাজা দাউদের দরবারে শান্তি ঘোষনা করেন।
প্রথম শাস্তি :- কখনো খড়্গ তাঁর পরিবার থেকে যাবে না ( 2 শমূযেলের ১২: ১০) । তার অর্থ হলো ক্রমাগত ভাবে তার রাজ বংশের যুদ্ধ ও রক্ত পাতের মধ্যে থাকবে ।
দ্বিতীয় শাস্তি :- নিজের ঘরে থেকে শত্রু তৈরী হবে যে দাউদের স্রীদের সাথে অশুচি কর্মে লিপ্ত হবে । দাওদ যেমন পরের স্রী বৎশেযাকে নিয়ে ছিলেন তেমনি ভাবে ঈশ্বর তার স্ত্রীদের অন্যদের দিবেন । দাযূদ এই পাপ করে ছিল গোপনে কিন্তু তার সন্তান অবশালেম করে ছিল ইসরাইলের সূযের (২শমুযেল ১২: ১১---১২) পদ ।
তৃতীয় শাস্তি :- বৎশেবার গর্ভের দাউদের সন্তানর মৃত্যু হবে । (২ শমূ: ১২:১৪)পদ ।
দাযূদ নাথনের দন্ড ঘোষণায় অনুতপ্ত হয়েছিলেন। ঈশ্বর তাঁকে ক্ষমাও করে ছিলেন তাঁর অনুতাপের কোন ভেজাল ছিল না । তার প্রমাণ আমারা গীত ৫১ তে দেখতে পাই । ঈশ্বর দাযূদের মৃত্যু দন্ড থেকে রক্ষা করেছিলেন । মোশীর আইন অনুযায়ী তিনি ছিলেন মৃত্যু দন্ড প্রপ্ত আসামি । কিন্তুু ঈশ্বর নাথনের মধ্যে দিয়ে দাউদ কে বলেছিলেন । সদা প্রভু আপনার পাপ দূর করলেন । আপনি মরিলেন না । ( ২ শমুয়েল ১২ :১৩) পদ ।
দাযূদের জীবনে ঈশ্বরের ভালোবাসা ক্ষমা যোগান সব আশীর্বাদ ছিল কিন্তু যখন দাওদ গভিত পাপ করলেন ।তখন ক্ষমা করলে ও শান্তি দিলেন । দাযূদ তার পরবর্তী জীবনে তা মেনে নিয়েই উত্থান পতন জীবন শেষ করেছিলেন ।
আমাদের যা করা দরকার :-
প্রভুর বাক্যেনুসারে খ্রীষ্ট যীশুতে যারা আছে যাদের কোন দন্ডজ্ঞা নাই । তার পরেও যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা ঘৃণিত কাজে লিপ্ত হন ঈশ্বর ক্ষমা করেন কিন্তু ফলাফল ভোগ করতে হয় । ঈশ্বর আমাদের পাপ করার জন্য অনুমোদন দেন নাই (রোমীয় ৬:১-২)পদ ।
ঈশ্বরের ইচ্ছা আমারা যেন পাপ না করি । তারপরও কেউ যদি পাপে পতিত হয় তাহলে আমাদের সহায় আছেন । তিনি আমাদের প্রভু ধার্মিক যীশু খ্রীষ্ট । তার পবিত্র রক্ত দ্বারা আমরা ধৌত হযেছি। আপনি যতই পাপ করেন না কেন প্রভুর কাছে আপনার জায়গা আছে । কারন তিনি দয়ার ঈশ্বর । এই জীবনে হয়তো আপনি বিনা সার্থে শাস্তি পাবেন কিন্তু প্রভুর দিনে আপনার আত্মার পরিত্রাণ পাবে ( ১করি ৫:৫) পদ ।
এক পাপ অন্য পাপের জন্ম দেয় । দায়ুদ নিজের পাপ উরিযের উপর চাপিয়ে দিয়ে বাচতে চেয়ে ছিলেন । তিনি প্রথমে ব্যর্থ হলেন পরে অন্য পরিকল্পনা উরিয়কে হত্যার পরিকল্পনা করলেন । প্রথমে পাপ থেকে ফিরে আসাই উত্তম । তা নাহলে চরম মূল্য দিতে হয় । রাজা দাউদ সহ অনেক দৃষ্টান্ত আমাদের চোখের সামনে আছে ।
উপসংহার :- ঈশ্বর দয়ালু তিনি আমাদের পাপ সকল ক্ষমা করেন । অনেক সময় পাপের জাগতিক ফল আমাদের ভোগ করতে হয় । ঈশ্বর যখনই আমাদের তার রাজ্যে ডাকছেন তখন পবিত্রাকরনে জন্যই ডাকছেন । তবুও আমারা প্রতি দিন ব্যর্থ হচ্ছি । কিন্তুু তিনি বিজয়ী জীবন যাপনের জন্য তার পবিত্র আত্মার তার লিখিত বাক্যেও পবিত্র জন দিয়েছেন। সেই জন্য আমাদের সাবধান হওয়া দরকার । প্রভুর বাক্য বলে ---"তোমারা ভ্রান্ত হইও না । ঈশ্বর কে পরিহাস করা যায় না । কেননা মনুষ্য যা কিছু বুনে তাহাই কাটবে । "( গালাতীয় ৬:৭)
Comments
Post a Comment